আরব দুনিয়ায় মিসরই প্রথম দেশ যারা প্রকাশ্যে ‘মেয়েদের ভায়াগ্রা’ বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে। মিসরের মতো একটি সামাজিকভাবে রক্ষণশীল দেশে এ ওষুধ বিক্রির অনুমোদন পাওয়ায় নানারকম আলোচনা হচ্ছে।

এ ওষুধ খাওয়ার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে দেশটির এক রক্ষণশীল গৃহবধূ বলছেন, আমার ঘুম পাচ্ছিল। মাথা ঘুরছিল। হূদ-পিন্ডের গতি দ্রুততর হয়ে গিয়েছিল। মেয়ে-দের ক্ষেত্রে এ ওষুধ সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে কাজ করে। ১০ বছর বিবাহিত জীবনযাপন করার পর নিতান্ত কৌতুহল থেকে তিনি এ ওষুধ খাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

ভায়াগ্রা হচ্ছে এমন এক ওষুধ যা পুরুষদের যৌনক্ষমতা বাড়ায়। মেয়েদের ক্ষেত্রে যৌন ইচ্ছা বাড়ানোর ওষুধের রাসায়নিক নাম হচ্ছে ‘ফ্লিবানসেরিন’। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘মেয়েদের ভায়াগ্রা’। পুরুষদের ভায়াগ্রা কাজ করে পুরুষাঙ্গে রক্তপ্রবাহ বাড়ানোর মাধ্যমে যাতে তার উত্থানশক্তি বাড়ে। আর ফ্লিবানসেরিন মূলত মেয়েদের বিষণ্নতা কাটায় এবং মস্তিষ্কে রাসায়নিক পদার্থের ভারসাম্য এনে তার যৌন ইচ্ছা বাড়ায়। প্রায় তিন বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে এই ওষুধ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়। মিসরের একটি স্থানীয় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি এখন এ ওষুধ তৈরি করছে। মিসরে ‘মেয়েদের ভায়াগ্রার’ রঙ গোলাপি। এ ওষুধ নিয়ে তৈরি করা বিজ্ঞাপনে বলা হচ্ছে, পুরুষদের ‘নীল বড়ির’ নারী সংস্করণ হচ্ছে এই ‘গোলাপি বড়ি’।

মিসরে ইদানীং বিবাহবিচ্ছেদের হার ক্রমশ বাড়ছে। স্থানীয় সংবাদ-মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দম্পতি-দের মধ্যে নানা রকম যৌন সমস্যা এর অন্যতম কারণ। ফ্লিবানসেরিনের স্থানীয় উত্পাদন-কারী কোম্পানি বলছে, মনে করা হয় মিসরের প্রতি ১০ জন নারীর মধ্যে তিনজনেরই যৌন ইচ্ছা কম। কিন্তু এটা অনুমাননির্ভর। কারণ এ দেশে এ বিষয়ে পরিসংখ্যান পাওয়া দুষ্কর। এ ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি আশরাফ আল-মারাগি বলছেন, এই ওষুধ রীতিমত বিপ্লব, মিসরে এরকম চিকিত্সার খুবই প্রয়োজন।

অবশ্য একজন ফার্মাসিস্ট বলেছেন, এ ওষুধ খেলে রক্তচাপ অনেকটা কমে যেতে পারে এবং হূিপন্ড ও যকৃতের সমস্যা আছে এ রকম কারো দেহে এটা সমস্যা তৈরি করতে পারে। হেবা কুতুব নামে মিসরের একজন সেক্স থেরাপিস্ট বলছেন, ফ্লেবানসেরিনের কার্যকারিতা খুবই কম। বরং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াই বেশি। তবে ফার্মেসি কর্মকর্তা সাদিকের মতে, মিসরে ফ্লিবানসেরিনের বিক্রি আশাব্যঞ্জক। ভবিষ্যতে এ ওষুধের বিক্রি আরো বাড়বে।সূত্র- বিবিসি