আমরা হেসেছিলাম…
সমুদ্রের জলে ভেসেছিলাম…
আমরা স্বপ্ন বেঁধেছিলাম…
আমরা সমুদ্রের মাঝে সূর্যোদয় দেখেছিলাম…’

মনখোলা এ অনুভূতি অভিনেত্রী সোহানা সাবার। নিসর্গঘেরা সেন্ট মার্টিন দ্বীপের সৌন্দর্যে অভিভূত হয়ে নিজের ফেসবুক পেজে যেন কবিতার মতো করেই স্তুতি গাইলেন একে নিয়ে। মোটে তিনদিনের জন্য এ দ্বীপে বাসা বেঁধেছিলেন সোহানা সাবা। গত সোমবার শুরু হওয়া এ ভ্রমণে সাবার অন্যতম সঙ্গী ছিলেন নির্মাতা ও অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন। বলা যায়, নীল আকাশ, নীল জলরাশির সঙ্গে মিলিয়ে শাওন-সাবাও নীল শাড়িতে সাজিয়েছিলেন নিজেদের। ৭২ ঘণ্টার এ সফরে কী করেননি তারা— সৈকতে হইহুল্লোড় করে, গান গেয়ে, গল্প-কথায় নিজেদের সুখকর মুহূর্তগুলো রোমন্থন করেছেন।

শান্ত-স্নিগ্ধ অপার সুন্দর সেন্ট মার্টিন দ্বীপ থেকে সোহানা সাবা, মেহের আফরোজ শাওন ও দলের বাকি সদস্যরা আবারো কোলাহলময় ঢাকায় ফিরেছেন। এসেই যেন যে যার মতো ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন নিজ নিজ কাজে। মেহের আফরোজ শাওনের ব্যস্ততা তো তুঙ্গে। তিনি এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন, যেন মন খুলে ভ্রমণবৃত্তান্ত শোনানোর মতোও সময় পেলেন না তিনি। কাজের ফাঁকে শুধু বললেন, ‘বেশির ভাগ সময়ই আমরা ঘুরতে বের হই কাজের প্রয়োজনে। কিন্তু এবার সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ভ্রমণ ছিল নিখাদ শুধু ঘোরার জন্য। আমরা দলবেঁধে শুধু প্রাণখুলে ঘুরতেই গিয়েছিলাম সেখানে।’

এদিকে সমুদ্রের কাছ থেকে যে বিস্ময় নিয়ে ফিরে এসেছেন সোহানা সাবা, সে বিস্ময়ের ঘোরও এখনো কাটেনি তার। টকিজের সঙ্গে সাবার এ নিয়ে তাই গল্পও জমে উঠল ঢের। শুরুতেই সাবা জানালেন তার দেখা সেন্ট মার্টিন প্রসঙ্গে। ‘পৃথিবীর অনেক সমুদ্রসৈকত ও দ্বীপে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে আমার। মনভরে সেসব সৌন্দর্যের প্রতিটি বিন্দু হূদয়ে জমিয়ে নিয়ে এসেছি। তবে সেন্ট মার্টিন দ্বীপকে এত দিন চাক্ষুষ দেখতে না পারার একটা আক্ষেপ ছিল। শেষ পর্যন্ত সেই আক্ষেপ ঘুচল। আমি তো সেন্ট মার্টিন দ্বীপের প্রেমে পড়ে গেলাম দেখছি!’ কেমন উপভোগ করলেন দ্বীপটির সৌন্দর্যসুধা? ‘স্বপ্নের দেখা নাকি বাস্তবের চেয়ে সুন্দর হয়। কিন্তু সেন্ট মার্টিন যেন এসব কথাকেই অমান্য করেছে। কাছ থেকে দেখে মনে হয়েছে, আগে না এসে এত দিন পর কেন এলাম! এর রূপের সুধা পেতে এতটা দেরি কেন করলাম’— বলেন সোহানা।

সেন্ট মার্টিন দ্বীপের রাতের দৃশ্য না দেখে ফেরেন, এমন লোকের সংখ্যা ঢের কম। যথারীতি এর রাতের দৃশ্যকে একদমই হাতছাড়া করতে চাননি সাবা-শাওনও। হাসতে হাসতে সাবা বললেন, ‘আমাদের দলের সবাই, এমনকি আমার চার বছরের পুত্র শুদ্ধ স্বরবর্ণ আর শাওনের দুই পুত্র নিনিত-নিষাদও আমাদের সঙ্গী হয়ে রাত ১১টার সময় সৈকতে আনন্দ করেছে। আমরা শুয়েছিলাম সবাই। আমাদের চোখের ওপর ভেসে থাকা আকাশ, জ্বলজ্বলে তারা আর পাড়ে আছড়ে পড়া সাগরের ঢেউয়ের ছন্দ আমাদের সবাইকে যেন অন্য এক জগতে নিয়ে গিয়েছিল তখন।’

এ পর্যায়ে ঘোরাঘুরির জন্য জুতসই সঙ্গী প্রসঙ্গে সাবা নিজ থেকেই বললেন, ‘আনন্দ ভ্রমণের সঙ্গী যদি মনের মতো না হয়, তাহলে যেন সবই গেল রসাতলে। আমি এক্ষেত্রে খুবই ভাগ্যবান যে, আমার ভ্রমণসঙ্গীরা অসাধারণ। আমার প্রিয় ভ্রমণসঙ্গীর এ দলে অন্যতম মেহের আফরোজ শাওন। এর আগে নেপাল ভ্রমণেও আমরা সঙ্গী হয়েছিলাম। এবারো হলাম। সব মিলিয়ে দারুণ এক অনভূতি আর সুখকর অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি আমরা।’

সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ভ্রমণের এ গল্প এখানেই ক্ষান্ত। এ পর্যায়ে সাবা তুলে ধরলেন তার অভিনীত প্রথম বাণিজ্যিক ছবি ‘আব্বাস ওটু’র সর্বশেষ নতুন তথ্য। সাবা জানালেন, অবশেষে আগামীকাল পুরান ঢাকায় শুরু হবে ‘আব্বাস ওটু’ ছবির শুটিং, চলবে মাসজুড়ে। অনেকেই হয়তো জানেন না, এ ছবিতে অভিনয়ের জন্য নিজেকে একটু অন্য রকমভাবে সাজাতে হচ্ছে সাবাকে। কারণ এ ছবি তার অভিনীত খেলাঘর, চন্দ্রগ্রহণ, প্রিয়তমেষু, বৃহন্নলা কিংবা ষড়রিপুর চেয়ে একেবারেই ভিন্ন রকম। সেটা উপস্থাপনা, গল্প কিংবা সাবার চরিত্র দিয়েই হোক, সবখানেই একটা চ্যালেঞ্জিং বিষয় থাকবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে সাবা যেভাবে এ ছবির জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন, তাতে সবকিছু উতরে অন্য রকম এক সোহানা সাবা হয়েই ফিরবেন বড় পর্দায়, এমন আত্মবিশ্বাসের কথা এ অভিনেত্রী জানান দিয়ে রাখলেন আগে থেকেই।-সূত্র- অনলাইন