বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ অন্য প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল সরকারের মাস্টারপ্ল্যানের অংশ বলে মনে করে বিএনপি।

রোববার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ অন্যান্য নেতাদের মনোনয়নপত্র বাতিল সরকারের দানবীয় আচরণ। এটি তাদের নিখুত মাস্টারপ্লানের অংশ।

ফেনী-১ আসনে খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র দুই মামলায় দণ্ডিত হওয়ার কারণে বাতিল করে দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। বগুড়া ৬ আসনেও তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, ঢাকা-৬ আসনে সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন, ঢাকা-২ আসনে নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ থেকে সদ্য পদত্যাগী চেয়ারম্যান আবু আশফাক খন্দাকার এবং দিনাজপুর-৩ আসনে জাহাঙ্গীর হোসেনের মনোনয়নপত্রও বাতিল করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এভাবে বেছে বেছে আমাদের জনপ্রিয় প্রতিনিধিদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হচ্ছে।… এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, ধারাবাহিক ঘটনা। সরকার পরিকল্পনা করেছে একতরফা নির্বাচন করবে, গায়ের জোরে নির্বাচন করবে এবং জোর করে ক্ষমতায় থাকবে।

রিজভী বলেন, মনোনয়নপত্র বাতিলের মধ্য দিয়ে সরকারের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দূরভিসন্ধিমূলক তাদের মাস্টারপ্লানেরই অংশ।

নির্বাচন বানচালের জন্য সরকার দেশব্যাপী ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে নির্বাচনের সময় এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি কখনও দেখা যায়নি।

রিজভী বলেন, ক্ষমতার মৌতাতে বুঁদ হয়ে থাকার জন্যই অবৈধ শাসকগোষ্ঠী আসন্ন নির্বাচন নিয়ে মাস্টারপ্ল্যানে ব্যস্ত আছে।

বিএনপির এ নেতা বলেন, তফসিল ঘোষনার শুরু থেকেই নির্বাচনের পরিবেশ যেন আরও অবনতিশীল হয়েছে। নৌকার পক্ষে হালে পানি না পাওয়ায় বিএনপিসহ বিরোধী দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ও নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা দায়ের ও গ্রেফতার করা হচ্ছে।

‘তাতেও সরকারের সাধ মিটছে না। এখন তাদের ভিটে-মাটিতে ঘু ঘু চড়িয়ে দিতে তারা সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে। সারাদেশে প্রার্থীসহ বেছে বেছে বিএনপির সক্রিয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, গুম করা হচ্ছে।’

রিজভী বলেন, বিএনপি প্রার্থীসহ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বাড়িতে বাড়িতে হামলা চালচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। আর এসব কিছু নেপথ্য থেকে নিয়ন্ত্রণ করছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও অন্যটি গণভবন। আর নির্বাচন কমিশন সহযোগী হিসেবে কাজ করছে।

জনগণকে ভোট থেকে দূরে রাখার জন্য সরকার পরিকল্পিতভাবে ভোটের পরিবেশ বিনষ্ট করার পাঁয়তারা করছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এ নেতা।

তিনি বলেন, পুলিশসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সরকারি দলের অনাচারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার ঘটনা থেকেই মনে হয়-তারা ভোটারদের ভীতিগ্রস্ত করতে চায়।

‘সুপরিকল্পিত মাষ্টারপ্ল্যানের অংশ হিসেবেই এসব করা হচ্ছে নৌকাকে জালিয়াতির মাধ্যমে বিজয়ী করার জন্য।’

নির্বাচন কমিশন অন্ধ না হয় কানা মন্তব্য করেন তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কতিপয় কমিশনার সরকারের পক্ষে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন। নির্বাচন কমিশন, পুলিশ প্রশাসন, আইন-আদালত, বিচারিক প্রক্রিয়া সবকিছুর ওপরই সরকার যেন সিন্দাবাদের জিনের মতো সওয়ার হয়ে আছে।