পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা বলেছেন, পাহাড়ে সংসদ নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই।

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির বেশিরভাগ ধারা বাস্তবায়ন হয়নি। কিন্তু সরকার অপপ্রচার চালাচ্ছে যে, চুক্তির বেশিরভাগ বাস্তবায়িত হয়েছে।

শান্তি চুক্তির ২১ বছর পূর্তি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমা। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সরকার ও জেএসএসের মধ্যে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

সন্তু লারমা বলেন, সরকার দাবি করছে চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ৪৮টি বাস্তবায়িত হয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বাস্তবায়িত হয়েছে ২৫টি। তবে এর মধ্যে ভূমি সমস্যার সমাধান, ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী ও অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসন, আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চল হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামের বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণ প্রভৃতি মৌলিক বিষয়ের একটিও বাস্তবায়িত হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, চুক্তির সঙ্গে সংগতি রক্ষার স্বার্থে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রযোজ্য আইনগুলো সংশোধন করা হয়নি। আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ সংবলিত বিশেষ শাসন ব্যবস্থা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়নি।

সন্তু লারমা অভিযোগ করেন, আঞ্চলিক পরিষদ আইন কার্যকর না করে পরিষদকে অথর্ব করে রাখা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি দখল বন্ধ হয়নি। গত ২১ বছরে একটি ভূমি বিরোধেরও নিষ্পত্তি হয়নি। ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইনের বিরোধপূর্ণ ধারাগুলো সংশোধন করা হলেও বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়নি। চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকে এখন পর্যন্ত পাহাড়িদের ওপর অন্তত ২০টি সাম্প্রদায়িক হামলা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য পাহাড়ি জনগণের অধিকার বাস্তবায়নে দ্রুত শান্তি চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মেজবাহ কামাল বলেন, পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়নের বিকল্প নেই।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, জেএসএস নেতা দীপায়ন খীসা প্রমুখ।