বিশ্বব্যাংকের ব্যবসা সহজীকরণ সূচকে এক ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বের ১৯০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান এবার ১৭৬তম। গত বছর এ তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৭৭তম। গত বুধবার বিশ্বের সবচেয়ে বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি ডুয়িং বিজনেস রিপোর্টে ২০১৯ প্রকাশ করে। এবারের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের স্কোর ১০০-এর মধ্যে ৪১ দশমিক ৯৭। ২০১৮ সালে পেয়েছিল ৪০ দশমিক ৯৯।

দেশের সার্বিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখে বিনিয়োগ। তাই বিদেশি বিনিয়োগ টানতে ব্যবসা সহজীকরণে সরকারের উদ্যোগের কমতি ছিল না। তার পরও এ সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। এমনকি বাংলাদেশকে ডিঙিয়ে আফগানিস্তান এবার উঠে এসেছে ১৬৭ নম্বরে।

বিশ্বব্যাংক বলছে, প্রতিযোগিতায় ভালো করতে চাইলে বাংলাদেশকে সংস্কারের গতি আরো বাড়াতে হবে। একটি দেশের ব্যাবসায়িক পরিবেশসংশ্লিষ্ট ১০টি মাপকাঠি তুলনা করে এই সূচক তৈরি করা হয়। বাংলাদেশের ব্যাবসায়িক পরিবেশ বুঝতে ব্যবহার করা হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের তথ্য।

১০টি মাপকাঠি হলো নতুন ব্যবসা শুরু করা, অবকাঠামো নির্মাণের অনুমতি পাওয়া, বিদ্যুৎ সুবিধা, সম্পত্তির নিবন্ধন, ঋণ পাওয়ার সুযোগ, সংখ্যালঘু বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা, কর পরিশোধ, বৈদেশিক বাণিজ্য, চুক্তি বাস্তবায়ন ও দেউলিয়া হওয়া ব্যবসার উন্নয়ন।

অর্থনৈতিক সংস্কার অব্যাহত রাখায় এ বছর ভারতের অবস্থানের ২৩ ধাপ এগিয়ে ৭৭তম অবস্থানে উঠে এসেছে। এ ছাড়া ভুটান এ সূচকে ৮১তম, শ্রীলঙ্কা ১০০তম, নেপাল ১১০তম, পাকিস্তান ১৩৬তম এবং মালদ্বীপ ১৩৯তম অবস্থানে রয়েছে।

বিশ্বব্যাংক বলছে, ১০ মাপকাঠির মধ্যে ছয়টিতেই বাংলাদেশের স্কোর গতবারের চেয়ে বেড়েছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ সুবিধার ক্ষেত্রে স্কোর বেড়েছে ৮.০৬ শতাংশ। চারটি মাপকাঠিতে স্কোর এবার গতবারের সমান। কোনো ক্ষেত্রেই অবনতি হয়নি। কিন্তু প্রতিবেশীরা বাংলাদেশের চেয়ে অনেক দ্রুত উন্নতি করছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালের পর ঢাকা ও চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ কাঠামোর উন্নয়নের ফলে সরবরাহ বাড়ানো সম্ভব হয়েছে। এই দুই বড় শহরে ব্যবসা করার জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া আগের চেয়ে সহজ হয়েছে। ২০১৪ সালে যেখানে আবেদন করার পর সংযোগ পাওয়ার জন্য গড়ে ৪০০ দিন অপেক্ষা করতে হতো, ২০১৮ সালে এসে তা কমে হয়েছে ১৫০ দিন।

প্রতিবেদনের বলা হয় ব্যবসা সহজীকরণের দিক থেকে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে নিউজিল্যান্ড। শীর্ষ দশে থাকা বাকি দেশগুলো হচ্ছে যথাক্রমে সিঙ্গাপুর, ডেনমার্ক, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, জর্জিয়া, নরওয়ে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও মেসেডোনিয়া।

এ ছাড়া যে ১০টি দেশ এবারের প্রতিবেদনে তিন বা ততধিক খাতে সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে সে দেশগুলো হচ্ছে যথাক্রমে আফগানিস্তান, জিবুতি, চীন, আজারবাইজান, ভারত, টোগো, কেনিয়া, আইভরি কোস্ট, তুরস্ক ও রুয়ান্ডা।