সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮- এর কয়েকটি ধারা সংস্কারসহ ৮ দফা দাবিতে পরিবহন শ্রমিকদের ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট চলছে। ধর্মঘটের প্রথম দিন রাজধানীতে বিভিন্ন স্থানে অফিসগামী যাত্রী আর স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের হেনস্তা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে পরিবহন শ্রমিকদের বিরুদ্ধে।

এরই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জে সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রীদের বহন করা বাসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছেন আন্দোলনরত পরিবহন শ্রমিকরা। একই সঙ্গে চালক ও ছাত্রীদের গায়ে পোড়া মবিল লাগিয়ে দিয়েছেন। রবিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার শিমরাইল এলাকায় একটি পাম্পের কাছে এ ঘটনা ঘটে।

একই সময়ে সিদ্ধিরগঞ্জে কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্সে রোগী না থাকায় পোড়া মবিল লাগিয়ে দেন শ্রমিকরা। এক অ্যাম্বুলেন্সের চালক আব্দুল্লাহ জানান, রোগী আনতেই তিনি যাচ্ছিলেন। রোগী আনতে গেলে তো খালি যেতে হবে। কিন্তু শ্রমিকরা সেই কথা না শুনেনি।

শিক্ষার্থীরা জানায়, দুপুর ১২টার দিকে সাইনবোর্ড এলাকা পার হওয়ার সময় শ্রমিকরা তাদের বাসটি থামিয়ে চালককে মারধর করেন। এরপর চালকের মুখে ও শরীরে পোড়া মবিল লাগিয়ে দেন। পরে এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে কয়েকজন ছাত্রীকেও পোড়া মবিল লাগিয়ে দেন শ্রমিকরা। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজও করেন। পরে বাসের কয়েকটি গ্লাস ভাঙচুর করে বাস থেকে তাদের নামিয়ে দেওয়া হয়।

বাসটির চালক মজিবর রহমান বলেন, বাসটিতে ৩৮ জন ছাত্রী ছিল। ছাত্রী বহনকারী বাসটি সাইনবোর্ড এলাকায় এলেই হামলা করে বাসের গ্লাস ভাঙচুর করেন শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ বেদৌরা বিনতে হাবিবা বলেন, ‘চালক ফোনে আমাকে সমস্ত ঘটনা জানিয়েছেন। শ্রমিকেরা গাড়ির কয়েকটি গ্লাস ভাংচুর করেছে। ছাত্রীদের গায়েও কালি দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার পর চালক বাসটি আনতে গেলেও শ্রমিকেরা ছাড়েননি। পরে তিনি বাধ্য হয়ে বাসটি একপাশে রেখেছেন। চালক কলেজে ফিরলে বিস্তারিত জেনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই রাজধানীতে বাসচাপায় দুই স্কুল শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর সারা দেশে শিক্ষার্থীদের নজিরবিহীন আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সড়ক পরিবহন আইন পাস করে সরকার। কিন্তু ওই আইনের কয়েকটি ধারা বাতিলের দাবি তুলেছেন পরিবহন শ্রমিকরা।