টেকনাফে চলতি ২০১৮-১৯ সালে আমন মৌসুমে বিভিন্ন ইউনিয়নে ১০ হাজার ৮শ ৭০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির ধান চাষ হয়েছে। এবার ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। বিভিন্ন স্থানে আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার ১ নং হোয়াইক্যং ইউনিয়নে ৬ হাজার ৭শ ২৪ হেক্টর, ২ নং হ্নীলা ইউনিয়নে ১ হাজার ৩শ ৫৫ হেক্টর, ৩ নং টেকনাফ সদর ইউনিয়ন ৯শ ৫ হেক্টর, ৪ নং সাবরাং ইউনিয়ন ৭শ ১৬ হেক্টর, ৫ নং বাহারছড়া ইউনিয়ন ১ হাজার ১শ হেক্টর, সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন ৬০ হেক্টর, টেকনাফ পৌরসভা ১০ হেক্টরসহ মোট ১০ হাজার ৮শ ৭০ হেক্টর জমিতে উফশীজাত বিআর-২৩ (৫ হেক্টর), ব্রি ধান-৩২ (৬৬০ হেক্টর), ব্রি ধান-৩৩ (১৭৩০ হেক্টর), ব্রি ধান-৩৯ (৯৩৫ হেক্টর), ব্রি ধান-৪১ (১০ হেক্টর), ব্রি ধান-৪৪ (৫৫ হেক্টর), ব্রি ধান-৪৯ (৪১৩০ হেক্টর), ব্রি ধান-৫২ (১০ হেক্টর), ব্রি ধান-৫৪ (৬০ হেক্টর), ব্রি ধান-৫৬ (৬০ হেক্টর), ব্রি ধান-৬২ (১০ হেক্টর), ব্রি ধান-৭৩ (২০ হেক্টর), ব্রি ধান-৭৬ (২০ হেক্টর), বিনা-৭ (২৬৫ হেক্টর), পাইজামসহ (১৬৫০ হেক্টর) ১৬ প্রজাতির মধ্যে মোট ৯৬২০ হেক্টর, হাইব্রিড প্রজাতির মধ্যে এরাইজ গোল্ড (১৬৫০ হেক্টর), স্থানীয় প্রজাতির মধ্যে লেমব্রচ (৩৫০ হেক্টর), বিন্নি (৪শ হেক্টর), লাল পাজাম (৩০০ হেক্টর), নুনাস (৭০ হেক্টর) আমন মৌসুমে চাষাবাদ করা হয়।
টেকনাফে এবার বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছিল না। এছাড়া ১৯ জন জনবল থাকার কথা থাকলেও উপজেলা কৃষি অফিসের অধীনে ২ জন টেকনিক্যাল অফিসার ও ৯ জন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের দিয়ে পর্যাপ্ত সার প্রাপ্তি নিশ্চিত ও কীটনাশক প্রয়োগ, সার্বিক তদারকি, পরামর্শ ও সহায়তায় চাষাবাদে আশাতীত ভালো ফলন হয়েছে।
এ ব্যাপারে হোয়াইক্যং নয়াবাজারের কৃষক আব্দুল মজিদ বলেন, আমি ব্রি-৩৩, পায়জাম, বিআর-১১, বিভিন্ন প্রজাতির ধান ২০ কানিতে চাষাবাদ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। আমার প্রতিবেশী অনেকে ধান কাটছে। ১৫/২০ দিন পর আমার ধানও কাটা হবে।
২ নং হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাংয়ের কৃষক রফিকুল ইসলাম মুন্সী জানান, আমি বিআর-১১, ব্রি-৩৩, ব্রি ধান-৪৯, পায়জাম প্রজাতির ২৫ কানি ধান চাষ করেছি। খুব ভালো ফলন দেখা দিলেও কাটার আগ মুহূর্তে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। বিষ প্রয়োগেও কোনো সুফল পাচ্ছি না। ৩ নং টেকনাফ সদর ইউনিয়নের জাহালিয়া পাড়ার কৃষক মুহাম্মদ ফয়েজ জানান, তিনি ৪ কানি জমিতে ভারতি পায়জাম ও ২৮ নং ধান চাষ করেছি। কানিতে ৯০ আরি মতো ধান হবে। ৪ নং সাবরাং ইউনিয়নের কাটাবনিয়ার মৌ. ছালামত উল্লাহ বলেন, ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে ৪ কানি ভারতি পায়জাম চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। তার ভাতিজা শওকত ৩ কানি জমিতে একই রকম ধানের চাষ করেছেন বলে জানান। বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর উত্তর-পশ্চিম পাড়ার রহমত উল্লাহ, আব্দুল আউয়াল, নুর আলম বলেন, প্রত্যেকে ৩-৫ কানি জমি চাষ করেছে। প্রতি কানিতে শত আরির উপরে পাবেন বলে তারা আশা প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে উপসহকারী কৃষি অফিসার শফিউল আলম বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস জনবল সংকটের মধ্যেও যথাসময়ে সার প্রাপ্তি, কীটনাশকের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা ছাড়াও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারে সক্রিয় ছিল। বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়নি। এছাড়া সংশ্লিষ্ট সকলের সার্বিক সহায়তা এবং আন্তরিকতায় টেকনাফের কৃষকদের মধ্যে আশাতীত আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।সূত্র-আজাদি