মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীরা এখন চাইলেই নিজের ব্যবহৃত নম্বরটি ঠিক রেখে পছন্দের অপারেটরে যুক্ত হতে পারবেন। এই সুবিধা দিতে ইতোমধ্যে বাংলাদেশে মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি বা এমএনপি চালু হয়েছে।

এই সুবিধার ফলে গ্রাহকরা তাদের মোবাইল নম্বর পরিবর্তন না করেই অপারেটর বদল করতে পারবেন।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) বলছে, বিশ্বে প্রায় ৭২টি দেশে এই সেবা পাচ্ছেন মোবাইল ফোন গ্রাহকরা। প্রতিবেশী ভারতে ২০১১ সালে এবং পাকিস্তানে ২০০৭ সাল থেকে এ ধরনের সেবা চালু আছে।

বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক আজ রাজধানীতে এমএনপি কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হলেও গ্রাহকরা এখন থেকেই এই সুবিধা নিতে পারবেন।

বাংলাদেশের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রায় ১৫ কোটি মানুষ বর্তমানে মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, যিনি এখন গ্রামীণ ফোনের নাম্বার ব্যবহার করছেন, তিনি তার ওই নম্বর পরিবর্তন না করেই রবি বা বাংলালিংকের ভয়েস ও ডাটা সুবিধা নিতে পারবেন।

সংবাদ সম্মেলনে বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং ও অপারেশন্স বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোস্তফা কামাল জানান, এমএনপি’র মাধ্যমে এক অপারেটরের নম্বরে অন্য অপারেটরের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা যাবে।

অর্থাৎ গ্রাহক যে অপারেটরের সেবা পছন্দ করবেন বিনা দ্বিধায় সেই অপারেটর বদল করতে পারবেন। এজন্য তার নিজের ফোন নাম্বারটি পাল্টাতে হবে না।

তিনি জানান, একজন গ্রাহক নির্ধারিত ফি প্রদানের মাধ্যমে প্রতিবারের জন্য অপারেটর বদল করতে পারবেন। আবার একই পদ্ধতিতে তিনি পুরনো অপারেটরে ফিরেও আসতে পারবেন। অপারেটর বদলের জন্য গ্রাহকদের নির্দিষ্ট অপারেটরের গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে গিয়ে ফি দিয়ে নতুন সিম তুলতে হবে।

সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিটের মধ্যে সিম পাওয়া যাবে, যদিও সেটি সক্রিয় হতে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তবে কেউ একবার অপারেটর বদল করলে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে আর অপারেটর বদলের সুযোগ পাবে না।

জানানো হয়, অনেকেই ফোনের ব্যাল্যান্সে অনেক টাকা জমা রাখেন বিরতিহীন সেবা পাওয়ার জন্য। এ অবস্থায় পুরো টাকা শেষ হলেই অপারেটর বদল করা ভালো সিদ্ধান্ত বলে পরামর্শ দেন কর্মকর্তারা।

তারা বলছেন, নতুন অপারেটরে গেলে পুরনো অপারেটরে থাকা টাকা কাজে লাগবে না। তবে তিনি যদি দুই বছরের মধ্যে পুরনো অপারেটরে ফিরে আসেন, তাহলে তিনি তার আগের জমা থাকা অব্যবহৃত টাকা ফেরত পাবেন।

বিটিআরসি ও এমএনপি সেবা দাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর দেয়া হিসেব মতে একজন গ্রাহককে অপারেটর বদলের জন্য সর্বোচ্চ ১৫৮ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে হবে। তবে এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ‘সিম পরিবর্তন করের’ বিষয়টিও রয়েছে যার পরিমাণ বর্তমানে সিম প্রতি ১০০ টাকা।