শিল্পী-কলাকুশলী ও প্রযোজকদের দ্বন্দ্বে টানা পাঁচ দিন বন্ধ রয়েছে কলকাতার মেগা সিরিয়ালের শুটিং। টেলিভিশন চ্যানেল কর্তৃপক্ষের কাছে বেশিরভাগ ধারাবাহিকেরই কোনো নতুন এপিসোড জমা পড়েনি।

মূলত বেতন ও ওভারটাইমের দাবিতে শনিবার থেকে চলছে এ ধর্মঘট। আগে বিভিন্ন সিরিয়ালের যে পর্বগুলোর শুটিং করা ছিল, সেগুলো মাত্র দিন দুয়েক চালানো গেছে। ফলে এখন চলতে হচ্ছে পুরনো পর্ব দিয়েই।

টানা পাঁচদিন শুটিং বন্ধ থাকায় থমকে গেছে ৩০টার মতো সিরিয়াল। রানি রাসমনি, জয় বাবা লোকনাথ, কুসুমদোলা, ফাগুন বউ, কৃষ্ণকলি, বকুল কথা, সীমারেখা, সাত ভাই চম্পার পুরনো পর্বই চলছে।

সোমবার থেকেই চলছে রিপিট শো। ফলে দর্শকরা অধৈর্য হয়ে উঠছেন। তার চেয়েও বড় কথা, বাংলা সিরিয়ালের ওপরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে লাখখানেক মানুষের জীবিকা নির্ভর করে। প্রযোজকদের সঙ্গে ফিল্ম কলাকুশলীদের সংস্থা আর্টিস্টস ফোরামের একের পর এক বৈঠক ব্যর্থ হয়েছে।

এদিকে টিভি সিরিয়াল নিয়ে অচলাবস্থার মোকাবিলায় এ বার সরাসরি হস্তক্ষেপ করছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে তিনি ডেকেছেন। অচলাবস্থা নিরসনে প্রয়োজনে সরকার কঠোর নির্দেশও জারি করতে পারে।

গত ৭ জুলাই রাজ্যের মন্ত্রী টেলি অ্যাকাডেমির সভাপতি অরূপ বিশ্বাসের মধ্যস্থতায় প্রযোজকদের সংগঠন ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন প্রোডিউসার (ডব্লিউএটিপি) এবং শিল্পীদের সংগঠন, পশ্চিমবঙ্গ মোশন পিকচার্স আর্টিস্টস ফোরামের (ডব্লিউবিএমপিএএফ) তরফে যৌথভাবে কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তার মধ্যে শিল্পী-কলাকুশলীদের বকেয়া টাকা মেটানো এবং কাজের সময় ১০ ঘণ্টায় বেঁধে দেয়া ছিল অন্যতম। তারপরও ফের জল ঘোলা হওয়ায় শনিবার থেকে বন্ধ রয়েছে শুটিং।

এ ক্ষেত্রে কাজ বন্ধ রাখার আন্দোলন করছেন প্রযোজকেরাও। যদিও শিল্পীদের দাবি, তাঁরা শুটিং করার জন্য প্রস্তুত। তবে সময়সীমা এবং বকেয়া মেটানোর দাবি মানতেই হবে।

আবার সমস্যা না মিটলে ৩১ আগস্টের পর থেকে বন্ধ হতে পারে ছবির শুটিং- এমন খবরও রয়েছে। ফলে আপাতত সব পক্ষকেই তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে মমতার আজকের বৈঠকের দিকে।

সূত্র : ভয়েস অব আমিরেকা, আনন্দবাজার, এই সময়।