নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় শিশু গৃহকর্মীকে খুন্তির ছ্যাঁকা ও গরম পানি নিক্ষেপ করে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালানোর অভিযোগে গৃহকর্তাকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাত ১২টায় ফতুল্লার পূর্ব ইসদাইর এলাকায় এ ঘটনা ঘঠে। নির্যাতনের শিকার হওয়া শিশু মাহি (৮)কে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীদের বরাত দিয়ে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মঞ্জুর কাদের বলেন, প্রায় সময় গরম খুন্তি ছেঁকা ও গরম পানি শরীরে ঢেলে শিশুটিকে নির্যাতন চালাতো গৃহকর্তা ও তার স্ত্রী। শুক্রবার মধ্যরাতে নির্যাতনের সময় চিৎকার শুনে প্রতিবেশিরা দরজা ভেঙ্গে শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। একই সময় গৃহকর্তা আতাউল্লাহ ও উরমী আক্তারকে উত্তম মাধ্যম দিয়ে পুলিশে দেয় এলাকাবাসী
মামলা সূত্রে জানা যায়, ফতুল্লার পূর্ব ইসদাইর আনন্দনগর এলাকার শহীদুল্লাহর বাড়ির ভাড়াটিয়া আতাউল্লাহ খোকন ও উর্মি আক্তারের বাসায় ৩ মাস ধরে পিতামাতাহীন শিশু মাহিকে গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজে নেয়।

শিশুটি বাসায় প্রায় সময় কান্নাকাটি করত। শুক্রবার রাতে বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে ওই দম্পতির বাসায় গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে থানায় খবর দেয় জাকির শনি।

পরে পুলিশ গিয়ে শিশুটির হাতে ও মুখে বর্বর নির্যাতনের চিহ্ন দেখতে পায়। তখন শিশুটিকে জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, তাকে কারণে-অকারণে কাজে ভুল ধরে খুন্তি গরম করে হাতে ও শরীরে ছ্যাঁকা দিত। কথায় কথায় মারধর করত।

২০-২৫ দিন আগে তার হাতে গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দেয়ায় তার ডান হাতের চামড়া উঠে যায়। শুক্রবারও সেই ক্ষত হাতে ছ্যাঁকা দেয়া হয়।

ফতুল্লা মডেল থানার ওসি শাহ মোহাম্মদ মঞ্জুর কাদের জানান, শিশুটিকে শহরের খানপুর ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। শিশুটি অনাথ। তার কোনো আত্মীয়স্বজন না পাওয়ায় প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে ওই বাড়ির প্রতিবেশী জাকির শনি বাদী হয়ে নির্যাতনের নানা বিষয় উল্লেখ করে মামলা করেছেন।