দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘কিংস পার্টি’ হিসেবে পরিচিত পাওয়া দুটি দলের শীর্ষ পদে থাকা পাঁচজন জামানত হারাচ্ছেন। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে তারা ন্যূনতম ভোট না পাওয়ায় জামানত হারাতে যাচ্ছেন।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ‘কিংস পার্টি’ হিসেবে আলোচনায় আসে তৃণমূল বিএনপি ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম)। জামানত হারাচ্ছেন তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরী, মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার ও নির্বাহী চেয়ারপারসন অন্তরা সেলিমা হুদা। এ ছাড়া বিএনএমের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর ও মহাসচিব মো. শাহজাহানও জামানত হারাচ্ছেন।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ২৩০ আসনে প্রার্থী দিলেও একটি আসনেও জয় পাননি তৃণমূল বিএনপির কোনো প্রার্থী। ভোট গ্রহণের দিনের আগেই দলটির অনেক প্রার্থী সরে দাঁড়িয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকা দলটির শীর্ষ তিন পদের প্রার্থীদের শোচনীয় পরাজয় হয়েছে। নির্বাচনের বিধি অনুযায়ী, প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ না পাওয়ায় তারা জামানত হারাচ্ছেন।

শমসের মবিন চৌধুরী

সিলেট-৬ আসনে ভোটে লড়েন তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরী। এই আসনে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

৭ জানুয়ারির ভোটের ফলে দেখা যায়, নৌকা প্রতীকে নুরুল ইসলাম নাহিদ পেয়েছেন ৫৭ হাজার ৭৭৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সরওয়ার হোসেন পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৪৮৮টি ভোট। আর শমসের মবিন চৌধুরী সোনালী আঁশ প্রতীকে পেয়েছেন ১০ হাজার ৯৩৬ ভোট। তার ওই ভোট জামানত রক্ষায় পর্যাপ্ত নয়।

তৈমুর আলম খন্দকার

নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসন থেকে ভোট করেন তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার। এই আসনে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী।

ভোটের ফলে দেখা যায়, নৌকা প্রতীকে গোলাম দস্তগীর গাজী পেয়েছেন ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কেটলি প্রতীকের মো. শাহজাহান ভূঁইয়া পেয়েছেন ৪৫ হাজার ৭৫ ভোট। আর তৈমুর আলম খন্দকার সোনালী আঁশ প্রতীকে পেয়েছেন মাত্র ৩ হাজার ১৯০ ভোট।

অন্তরা সেলিমা হুদা

মুন্সিগঞ্জ-১ (সিরাজদিখান-শ্রীনগর) আসনে ভোটে লড়েন তৃণমূল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার মেয়ে ও দলের নির্বাহী চেয়ারপারসন অন্তরা সেলিমা হুদা। এই আসনে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মহিউদ্দিন আহমেদ

ভোটের ফলে দেখা যায়, নৌকা প্রতীকে মহিউদ্দিন আহমেদ পেয়েছেন ৯৫ হাজার ৮৬০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম সারোয়ার কবির ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ৬১ হাজার ৫৪০ ভোট। আর অন্তরা সেলিমা হুদা সোনালী আঁশ প্রতীকে পেয়েছে ৬ হাজার ৩৩৭ ভোট।

শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর ও মো. শাহজাহান ‘কিংস পার্টি’ হিসেবে পরিচয় পাওয়া আরেকটি দল বিএনএমের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর ও মহাসচিব মো. শাহজাহানও জামানত হারাচ্ছেন।

ফরিদপুর–১ (বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গা, মধুখালী) আসনে নির্বাচনে অংশ নেন বিএনএমের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর। এই আসনে মোট ভোট পড়ে ২ লাখ ৩৭ হাজার ৫১৫টি। জামানত রক্ষা করতে হলে দরকার ছিল ২৯ হাজার ৬৮৯ ভোটের। কিন্তু আবু জাফর পেয়েছেন ২২ হাজার ৪৬৫ ভোট।

চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেন বিএনএমের মহাসচিব মো. শাহজাহান। এই আসনে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রার্থী মুহম্মদ শফিকুর রহমান।

ভোটের ফলে দেখা যায়, মুহম্মদ শফিকুর রহমান নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৩৬ হাজার ৪৬৮। আর মো. শাহজাহান পেয়েছেন ১ হাজার ৭৪ ভোট।