রাশিয়ার কৃষ্ণসাগরীয় নৌবাহিনীর সদর দপ্তরে গত শুক্রবার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। ওই হামলায় একজন নিহত হয়েছেন এবং হামলাটির দায়ও স্বীকার করেছে ইউক্রেন। ওই হামলার পর গতকাল শনিবার আবারও ক্রিমিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবর পাওয়া গেছে। আল জাজিরা গতকাল জানিয়েছে, এই দফার হামলায় রাশিয়ার অন্তত ৯ সেনা নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১৬ জন। হতাহতদের মধ্যে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর দুই জেনারেলও রয়েছেন বলে দাবি করেছে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী। ইউক্রেনের শীর্ষ গোয়েন্দা অধিদপ্তরের প্রধান কিরিলো বুদানোভ বলেছেন, ‘আহতদের মধ্যে কৃষ্ণসাগর নৌবহর গ্রুপের কমান্ডার কর্নেল জেনারেল (আলেকজান্ডার) রোমানচুকের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। এ ছাড়া চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল (ওলেগ) সেকভ সংজ্ঞাহীন রয়েছেন।’

রাশিয়ার বিরুদ্ধে চলমান পাল্টা আক্রমণে ইউক্রেনকে সহায়তার লক্ষ্যে আধুনিক দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আধুনিক এসব অস্ত্র প্রায় ৩শ কিমি দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে গতকাল এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।

খবরে বলা হয়, এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধের সম্মুখভাগ থেকে বেশ গভীর পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম হবে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ এবং ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, কিয়েভ ‘অল্পসংখ্যক’ এটিএসিএমএস (আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম) ক্ষেপণাস্ত্র পাবে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে বলেছেন। স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে এই দুই নেতার বৈঠক হয়। সেখানেই এই কথা জানান প্রেসিডেন্ট বাইডেন। এমনকি দূরপাল্লার এসব ক্ষেপণাস্ত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পাঠানো হবে বলে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে। এদিকে অস্ত্র দেওয়ার আলোচনা সম্পর্কে জানেন এমন বেশ কয়েকজনের বরাত দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট বলেছে, ইউক্রেন একক ওয়ারহেডের পরিবর্তে ক্লাস্টার বোম্বলেটে সজ্জিত এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র পাবে। বিবিসি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বাইডেন-জেলেনস্কি আলোচনার পর ওয়াশিংটন ইউক্রেনের জন্য আর্টিলারি ও গোলাবারুদসহ ৩২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সামরিক সহায়তার নতুন প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া ইউক্রেনে সর্বাত্মক আক্রমণ শুরু করেছে। যদিও মস্কোর ভাষায় এটি বিশেষ সামরিক অভিযান। চলমান যুদ্ধে গোটা বিশে^ই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এই যুদ্ধ ঘিরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও মেরুকরণ প্রকট হতে শুরু করেছে। একই সঙ্গে বাড়ছে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কাও।