আগামী অর্থবছরের বাজেটেও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, ‘যতদিন অর্থনীতিতে অপ্রর্দিশত অর্থ থাকবে, ততদিন এ সুযোগ অব্যাহত রাখবে সরকার।’

আজ বুধবার দুপুরে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনলাইনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি সভাপতিত্ব করেন।

অর্থমন্ত্রীর কাছে সাংবাদিকরা জানতে চেয়েছিলেন আগামী অর্থবছরে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকছে কিনা? জবাবে তিনি বলেন, ‘কালোটাকা নয়। অপ্রদর্শিত টাকা। এবারও এ সুযোগ থাকবে। অপ্রর্দিশত টাকা যতদিন পর্যন্ত প্রদর্শিত হবে না, ততদিন সরকার এ সুযোগ দিতে থাকবে।’

আগামী বাজেটে অপ্রদর্শিত টাকা প্রদর্শনের সুযোগ চলতি অর্থবছরের মত একই রকম শর্তে থাকবে কিনা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সেটা এখনই বলা যাবে না। এজন্য বাজেট পেশের দিন আগামী ৩ জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। উল্লেখ, চলতি অর্থবছরে বিনা প্রশ্নে মাত্র ১০ শতাংশ কর দিয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অপ্রর্দিশত অর্থ প্রদর্শন করা যাচ্ছে। এছাড়া জমি ও ফ্লাটের ক্ষেত্রে বর্গফুট অনুযায়ী কর পরিশোধ করে প্রদর্শন করা বা আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করা যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের কিছুক্ষেত্রে পদ্ধতিগত কারণে অনেক সময় টাকা অপ্রদর্শিত থাকে। এসব অর্থ যদি প্রদর্শন করার সুযোগ দেওয়া না হয়, অর্থনীতির মূলধারায় না আনা হয়, তাহলে অর্থনীতি ঠিকভাবে কাজ করবে না।’

‘বুঝতে হবে কী কী কারণে অর্থ অপ্রদর্শিত হয় । জমি রেজিস্ট্রেশন ও স্ট্যাম্প ফি অনেক বেশি। আবার মৌজা মূল্য অনেক কম। মৌজা মূল্য যদি বাজার দরের সমান হত, তাহলে কোনো অপ্রদর্শিত টাকা হত না। এই যে পদ্ধতি এর কারণে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের কাছে অপ্রদর্শিত টাকা থাকে। সেজন্য তারা বিপদে পড়ে। এজন্য সরকার ক্রমান্বয়ে আয়কর হার, জমির নিবন্ধন ফি, স্ট্যাম্প ডিউটি কমিয়ে দিচ্ছে। যাতে সবাই প্রকৃত মূল্য প্রকাশ করতে পারে। আগে আয়কর হার অনেক বেশি ছিলো, যে কারণে অনেকে কর দিতো না। এজন্য সরকার আয়কর পর্যায়ক্রমে কমিয়ে নিয়ে আসছে। বাংলাদেশের মতো বিশ্বের অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের সঙ্গে তুলনা করলে যাতে একইরকম চিত্র পাওয়া যায়। সেরকম ব্যবস্থা সরকার নিচ্ছে। আশা করা যায় এক সময় অপ্রর্দশিত টাকা অর্থনীতির সিস্টেম থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে’, যোগ করেন মুস্তফা কামাল।

বুধবারের অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে দুটি ও ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটির বৈঠকে ১০টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে।