দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম ও তার বাবার ওপর হামলার ঘটনায় ঘোড়াঘাট থানার ওসি আমিরুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দিনাজপুরের পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন।

জানা গেছে শুক্রবারের মধ্যেই তাকে ঘোড়াঘাট থানা থেকে প্রত্যাহার করে দিনাজপুর পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হচ্ছে। রংপুর সদর থানার পরিদর্শক আজিম উদ্দিনকে ঘোড়াঘাট থানায় নতুন অফিসার ইনচার্জের (ওসি) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ওপর হামলার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় ব্যর্থতা এবং ওই রাতে পুলিশের টহল নিয়ে প্রশ্ন ওঠে ওসি আমিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, তিনি দায়িত্ব পালনকালে নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ওপরও হামলা হয়েছিল।

এদিকে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে পাওয়া দুই আসামি নবীরুল ইসলাম ও সান্টু কুমারকে আজ শুক্রবার দুপুরের পরে আদালতে তোলা হবে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ওসি ইমাম জাফর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এরই মধ্যে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য দিনাজপুরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। তিনি আসার পর আদালতে ওই দুই আসামিকে তোলা হবে। জুমার নামাজের পর তাদের আদালতে নিয়ে যাওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

গত ৫ সেপ্টেম্বর এই মামলায় তিন জনের মধ্যে দুই আসামি নবীরুল ইসলাম ও সান্টু কুমারকে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ওই দিন রাতেই তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে ডিবি।

এদিকে মামলার প্রধান অভিযুক্ত আসাদুল ইসলামকে গত ৬ সেপ্টেম্বর আদালতের মাধ্যমে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়েছে ডিবি পুলিশ। সেই হিসেবে শনিবার তারও রিমান্ড শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। তবে তাকে আগামীকাল নাকি রবিবার আদালতে তোলা হবে এখনও বিষয়টি জানানো হয়নি।

প্রসঙ্গত, গত ২ সেপ্টেম্বর দিনগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে ইউএনও’র সরকারি বাসভবনে ঢুকে হামলা করে দুর্বৃত্তরা। প্রথমে গেটে দারোয়ানকে বেঁধে ফেলে তারা। পরে বাসার পেছনে গিয়ে মই দিয়ে উঠে ভেনটিলেটর ভেঙে বাসায় প্রবেশ করে হামলাকারীরা। ভেতরে ঢুকে ভারী ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে এবং আঘাত করে ইউএনও ওয়াহিদাকে গুরুতর আহত করে তারা। এ সময় মেয়েকে বাঁচাতে এলে বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখকে (৭০) জখম করে দুর্বৃত্তরা। পরে তারা অচেতন হয়ে পড়লে মৃত ভেবে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। ভোরে স্থানীয়রা টের পেয়ে তাদের উদ্ধার করেন।

ওয়াহিদাকে প্রথমে রংপুরে ও পরে রংপুর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে ঢাকায় আনা হয়। বর্তমান তিনি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।