সাধারণত ঈদের সময়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ে। কিন্তু এবার ঘটছে ভিন্ন। কোরবানির ঈদের পরও রেমিট্যান্সের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। করোনার মধ্যেই দেশে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ আরেকটি মাইলফলক অতিক্রম করতে চলেছে। গত বৃহস্পতিবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩৮ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলার, যা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। সংশ্লিষ্টদের মতে, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নগদ দুই শতাংশ প্রণোদনা পাওয়ায় টাকা পাঠানোর বেআইনি পন্থা (হুন্ডি) অবলম্বন ছেড়ে দিয়ে প্রবাসীরা বৈধ পথে টাকা পাঠানোর দিকে ঝুঁকছেন। ফলে রেমিট্যান্স বাড়ছে হুহু করে।

সূত্র মতে, চলতি সপ্তাহের শুরুতেই রিজার্ভ (৩৯ বিলিয়ন ডলার) তিন হাজার ৯০০ কোটি ছাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে। করোনায় দেশে রেমিট্যান্সের গতি থামেনি। বরং তা আরও বেড়েছে। কোরবানির ঈদের পরও রেমিট্যান্সের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেওয়ায় প্রবাসীরা এখন বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে আগ্রহী হচ্ছেন। তাই প্রতিনিয়তই রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে। অথচ এক সময় প্রবাসীরা বেশির ভাগ অর্থই পাঠাতেন হুন্ডিতে। এখন হুন্ডিতে পাঠানোর মাত্রা কমে এসেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দুই শতাংশ প্রণোদনা অব্যাহত থাকলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স আরও বাড়বে। একই সঙ্গে হুন্ডি কমাতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর তদারকি বাড়ানো জরুরি এবং প্রবাসীদের হুন্ডির ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে পারলে এক সময় হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠানোর মাত্রা শ‚ন্যে নেমে আসবে। এতে একদিকে বৈধ পথে লেনদেন বাড়বে। প্রবাসীরাও নগদ প্রণোদনার অর্থে লাভবান হবেন। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও শক্তিশালী হবে। যা দেশের বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্য ও বৈদেশিক বাণিজ্যকে বিশ্বে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি অগাস্ট মাসের ২০ দিনে ১৩৪ কোটি ১০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। গত বছরের পুরো আগস্ট মাসে ১৪৪ কোটি ৪৭ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছিল দেশে। আগের মাস জুলাইয়ে ২৬০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনই এক মাসে এতো বেশি রেমিট্যান্স আসেনি। এর আগে এক মাসে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছিল গত জুনে, ১৮৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন বৈধ পথে রেমিট্যান্স আসছে। এ ছাড়া আমদানি ব্যয়ের চাপ কম, দাতা সংস্থা বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ ও জাইকার বৈদেশিক ঋণ সহায়তা ও বিশ্ব সংস্থার অনুদানের কারণে রিজার্ভ বাড়ছে।