চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে নারীদের ভারতে বিক্রির চক্রের মূলহোতা প্রতীক খন্দকারকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। প্রতীক ও জেরিন স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিলেও তারা দু’জনই প্রতারক। তারা স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে একসঙ্গে বসবাস করতো এবং নারীদের বিদেশে পাঠানোর জন্য বিভিন্নভাবে প্রলুব্ধ করে তাদের ভারতে দালাল চক্রের কাছে বিক্রি করে দিতো। এমনকি জোরপূর্বক অসামাজিক কাজে লিপ্ত হতে বাধ্য করতো। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মালিবাগ সিআইডির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ রেজাউল হায়দার।
এ সময় তিনি আরো বলেন, ২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বর রাজধানীর সবুজবাগ থানা এলাকার একটি বাসায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে একটি ফ্ল্যাটে সাবলেট হিসেবে ভাড়া ওঠেন প্রতীক খন্দকার ও জান্নাতুল ওরফে জেরিন। ওই ফ্ল্যাটে থাকা এক নারীকে ভালো চাকরি দিয়ে মালয়েশিয়া পাঠাবে বলে প্ররোচিত করতো তারা। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী ওই নারীকে তারা পাচারকারী চক্রের অন্য সদস্যদের মাধ্যমে বেনাপোল সীমান্তের একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে ভুক্তভোগী ওই নারীকে আটকে রাখে ধর্ষণ করা হয়। এরপর ভুক্তভোগীকে ভারতে একটি দালাল চক্রের কাছে বিক্রির উদ্দেশে পাচার করার সময় পুলিশ ওই ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার করে এবং পাচারকারী চক্রের অন্য এক সদস্যকে আটক করে। এ সময় মানবপাচারকারী চক্রের মূলহোতা প্রতীক পালিয়ে যায়।
অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ রেজাউল হায়দার বলেন, ভুক্তভোগী ওই নারীর পরিবারের করা মামলায় প্রতারক জেরিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর টানা এক বছর অনুসন্ধানের পর ভারতে নারী বিক্রির জন্য মারবপাচার চক্রের মূলহোতা পলাতক আসামি মহেনুমুজ্জামান ওরফে প্রতীক খন্দকার ওরফে বাবুকে (২৬) চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে গ্রেফতার হওয়া দুই আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। প্রতীক ও জেরিন দু’জনই বিভিন্ন বয়সী নারীদের মালয়েশিয়া, দুবাই ও ভারতে ভালো বেতনে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখাতো। প্রথম থেকে শুরু করে ভারতে তাদের বিক্রির আগ পর্যন্ত খুব ভালো ব্যবহার করতো। এরপর ভারতে পাচারের পর তাদের অসামাজিক কাজে লিপ্ত হতে বাধ্য করতো এ চক্রটি। ওই চক্রের কাছে এসব নারীদের বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নিতো এ প্রতারকরা।
তিনি আরও বলেন, এর আগেও আসামিরা বিভিন্ন নারীকে সৌদি আরব পাঠানোর কথা বলে ভারতে পাচার করে এবং অনৈতিক কাজে লিপ্ত হতে বাধ্য করেছে। এবিষয়ে তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আসামি প্রতীকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নগ্রাফি আইনে প্রথক দু’টি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।