সরকারী চাকুরীতে ৩০% মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রেখে তা বাস্তবায়নে কমিশন গঠন করা সহ ৯ দফা দাবিতে সমাবেশ করেছে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের সংগঠন ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’।
শনিবার শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনের ওই সমাবেশ থেকে ‘এই মহলটিকে’ আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখতে ৯ দফা দাবিও তুলে ধরেন তারা।

সংগঠনের সভাপতি মো. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের
অধ্যাপক এ কে এম জামাল উদ্দিন।
এসময় কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে স্বাধীনতাবিরোধীরা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা করছে বলে দাবি করেছেন ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ সংগঠনের নেতারা।

অধ্যাপক এ কে এম জামাল উদ্দিন বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গণতান্ত্রিক সরকার থাকায় আন্দোলন করার অধিকার সবারই রয়েছে, কিন্তু তথাকথিত কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে মুক্তিযোদ্ধাদের হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে।’

‘আন্দোলনে মুক্তিযোদ্ধাদের কটূক্তি করা হয়েছে। আন্দোলনে অনেকে প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়েছে ‘আমি রাজাকারের সন্তান’। এগুলোর বিচার হওয়া উচিত। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশে বর্তমান প্রজন্মের কাছে আমরা এরকম আচরণ আশা করিনি।’

সংগঠনটির সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনর্বহাল না করা হলে ৭১-এর পরাজিত শক্তি ডুগডুগি বাজাবে। কারণ তারা দীর্ঘদিন ধরে মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান-অপদস্থ করতে চেয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণার ফলে তারা আজ উল্লাসে মেতে উঠেছে।’

সমাবেশে বক্তারা বলেন, সরকার আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নেওয়ায় দেশবিরোধী চক্রান্তকারীদের গরম ভাতে ছাই পড়েছে। তাই তারা কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সাধারণ ছাত্র নামধারী কিছু দিকভ্রান্ত যুবককে দিয়ে দেশে নৈরাজ্য ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।

তারা বলেন, পঁচাত্তর সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্র হয়েছে। পরবর্তীতে ২০০১ সালের পর মুক্তিযোদ্ধা কোটা আবারো ষড়যন্ত্রের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়। এভাবে মুক্তিযুদ্ধের পর ২৯ বছর কোটায় কোনো মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের চাকরি হয়নি।

মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং পরবর্তী ২৯ বছর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস এবং ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে বলে দাবি তাদের।

কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানান।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য জোবায়দা হক অজন্তা, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান জাতীয় সমন্বয় পরিষদের সভাপতি মো. আজিজুল হাসান, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান প্রজন্ম পরিষদের আহ্বায়ক আশিকুর রহমান।