রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে ভ্লাদিমির পুতিনকে আগামী ১৬ বছরের জন্য ক্ষমতায় থাকার সুযোগ দিতে সংবিধান সংশোধনীর পক্ষে ভোট দিয়েছেন দেশটির বেশিরভাগ নাগরিক।

রাশিয়ার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন জানায়, সংবিধান সংশোধনীর জন্য সাত দিনের গণভোটে সংশোধনের পক্ষে পড়েছে ৭৭.৯ শতাংশ আর বিপক্ষে পড়েছে ২১.২ শতাংশ ভোট।

রয়টার্স জানায়, গণভোটের ফল অনুযায়ী ৬৭ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট পুতিনের ৮৩ বছর বয়স পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার পথ সুগম হলো। সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়ার ক্ষমতায় থাকা সাবেক কেজিবি কর্মকর্তা পুতিন ২০২৪ এ মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আরও ছয় বছর করে দুই বারের জন্য ক্ষমতায় থাকার সুযোগ পাবেন।

রাশিয়ায় ২০২৪ ও ২০৩০ সালের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। ফলে, তার ২০৩৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার সুযোগ আছে।

দেশটির নির্বাচন কমিশনের প্রধান এলা পামফিলোভা জানান, নির্বাচন স্বচ্ছ হয়েছে। কর্মকর্তারা সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য সব কিছু করেছেন।

এদিকে, গণভোটের ক্ষেত্রে এক ধরনের প্রতারণার আশ্রয় নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সমালোচকরা।

পুতিনকে ‘আজীবন প্রেসিডেন্ট’ করার উদ্দেশ্যে এই ভোটের আয়োজনের নিন্দা জানিয়েছেন দেশটির বিরোধী নেতা আলেক্সি নাভালনি। এই নির্বাচনকে ‘অবৈধ’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সমর্থকদের উদ্দেশ্যে একটি ভিডিওতে নাভালনি বলেন, ‘আমরা এই ফলাফল কখনই মেনে নেব না।’

নাভালনি জানান, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে আপাতত রাস্তায় নেমে কোনো বিক্ষোভ কর্মসূচি দেওয়া হবে না। তবে, আসন্ন আঞ্চলিক নির্বাচনে বিরোধীদের অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বাধা দেওয়া হলে অথবা নির্বাচনী ফল নিয়ে কারচুপি হলে লাখো মানুষ রাস্তায় নেমে আসবে।

নাভালনি আরও বলেন, ‘পুতিন সবচেয়ে বেশি যেটা ভয় পান তা হলো ‘রাস্তা’। যতক্ষণ না আমরা সংখ্যায় লাখো হয়ে রাস্তায় নামতে শুরু করি ততক্ষণ তিনি ক্ষমতা ছাড়বেন না।’

রয়টার্স জানায়, বুধবার, ভোটের শেষ দিন ভোটকেন্দ্রগুলোতে যাওয়ার সময় সুযোগ-সুবিধার প্রচারণার অংশ হিসেবে পুতিনের আদেশে যেসব দম্পতির সন্তান আছে তাদেরকে ১০ হাজার রুবল (১৪১ ডলার) করে দেওয়া হয়।

সংবিধান সংশোধনীর জন্য নির্বাচনের তারিখ ২২ এপ্রিল নির্ধারিত হলেও করোনা সংক্রমণের মুখে তা স্থগিত করে ক্রেমলিন। করোনাভাইরাস মহামারিতে ভিড় এড়াতে সাত দিনব্যাপী এ গণভোট অনুষ্ঠিত হয়।