ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফের) গুলিতে জুয়েল মিয়া (২৭) নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেনসীমান্ত নদী জাদুকাটায় গাছ ধরতে গিয়ে।

রোববার সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই যুবকের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। এর পর বাদএশা সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের ঘাগটিয়া মাদ্রাসা মাঠে জানাজা শেষে কাইকরপাড়া পঞ্চায়েতি কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

নিহত জুয়েল জেলার তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের ঘাগটিয়া কাইকরপাড়ার আফাজ উদ্দিনের ছেলে।

রোববার রাতে নিহতের স্বজনরা জানান, উপজেলার ঘাগটিয়ার কাইকরপাড়ার জুয়েল কয়েকজন সহযোগীর সঙ্গে ছোট নৌকা নিয়ে শনিবার সকালের দিকে টানা বৃষ্টিপাতে ভারতের মেঘালয় থেকে ধেয়ে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে সীমান্ত নদী জাদুকাটা দিয়ে ভেসে আসা গাছ ধরতে যান।

একপর্যায়ে সুনামগঞ্জ-২৮ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের (বিজিবি) লাউরগড় কোম্পানি হেডকোয়ার্টার নিয়ন্ত্রিত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের মেইন পিলার ১২০৩ অতিক্রম করে স্রোতের তোড়ে ভাসতে ভাসতে ছোট নৌকাটি মেঘালয় স্টেইটের অভ্যন্তরে ঘোমাঘাট বাজারমুখী অগ্রসর হয়।

এর পর বেলা ১২টার দিকে ভারতের শিলং-১১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের ঘোমাঘাট কোম্পানি হেডকোয়ার্টারের টহল দল নৌকায় থাকা বাংলাদেশি নাগরিকদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে।

বিএসএফের ছোড়া একটি গুলি জুয়েলের পেটে বিদ্ধ হয়ে বেরিয়ে যায়।
আহতাবস্থায় জুয়েলকে নিয়ে নৌকায় থাকা অন্যরা বাংলাদেশি সীমানায় ফিরে আসেন। চিকিৎসার জন্য বিকালের দিকে তাকে পার্শ্ববর্তী বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

সেখানে চিকিৎসাসেবা না পাওয়ায় রাত ৮টায় সিলেট এমএমজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ামাত্রই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে জুয়েল মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

নিহতের বাবা আফাজ উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, পাহাড়ি ঢলের পানিতে অনেক গাছপালা, লাকড়ি, কয়লা জাদুকাটা নদী দিয়ে ভেসে আসে। পরিবারের দারিদ্র্যতার কারণে উপার্জনক্ষম ছেলে জুয়েল অন্যদের সঙ্গে ঢলের পানিতে নৌকা নিয়ে ভেসে আসা গাছ ধরতে যান।

স্রোতের তোড়ে নৌকা নিয়ে ভাসতে ভাসতে ভারতীয় সীমানায় অনিচ্ছাকৃতভাবে প্রবেশ করলে ভারতীয় বিএসএফ গুলিবর্ষণ করে। এতে তার মৃত্যু হয়।

সুনামগঞ্জ-২৮ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন (বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মাকসুদুল আলম যুগান্তরকে বলেন, বিএসএফের গুলিতে জুয়েল নামক এক যুবকের মৃত্যুর বিষয়টি লোকমুখে জেনেছি। নিহতের পরিবার বিষয়টি বিজিবিকে অবহিত করেনি।

এ নিয়ে বিজিবি ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে ভারতীয় শিলং-১১ বিএসএফ কমান্ডেন্টকে কড়া প্রতিবাদপত্র পাঠানো হবে।