আজ রোববার আকাশ পর্যবেক্ষণকারীরা পশ্চিম আফ্রিকা থেকে আরব উপদ্বীপ, ভারত ও চীনের দক্ষিণাঞ্চল থেকে সূর্য গ্রহণকালে বিরল দৃশ্য ‘রিং অব ফায়ার’ দেখতে পাবেন।

পৃথিবী ও সূর্যের মাঝ দিয়ে চাঁদ পৃথিবী অতিক্রমের সময় সূর্য আড়াল করায় এই প্রাকৃতিক ঘটনা দৃশ্যমান হয়, এ সময় পৃথিবীর যে অঞ্চলে চাঁদের ছায়া পড়ে সেইসব এলাকা থেকে সূর্য গ্রহণ দেখা যায়। চাঁদ সূর্যের গোটা আলোর বলয় আড়াল করতে পারে না, তাই চাঁদের বাইরে দিয়ে বৃত্তাকারে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটে, এটিকে ‘রিং অব ফায়ার’ বলা হয়।

এক অথবা দুই বছরে অন্তত একবার সূর্যগ্রহনকালে রিং অব ফায়ার দেখা যায়। পৃথিবীর জুড়ে সীমিত এলাকা থেকে এটি দেখা যায়।

রোববার উত্তর গোলার্ধে সবচেয়ে দীর্ঘতম দিন। এতে উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মের উপস্থিতি প্রকাশ পায়। এ সময় দক্ষিণ গোলার্ধ সরাসরি সূর্যের দিকে ঝুঁকে থাকে। ‘রিং অব ফায়ার’ প্রথম দেখা যাবে কঙ্গোর উত্তর পূর্বাঞ্চল থেকে, সূর্য ওঠার পরপরই স্থানীয় সময় ৫ টা ৫৬ মিনিটে(গ্রীনিচ মান সময় ৪টা ৫৬ মিনিট)। পূর্ণ গ্রহণের সময় হবে ১ মিনিট ২২ সেকেন্ড।

পৃথিবী, চাঁদ ও সূর্য একই রেখায় অবস্থান করবে মাত্র ৩৮ সেকেন্ড। প্যারিস অবজারভেটরির জ্যোতির্বিদ ফ্লোরেন্ট ডেলিফি বলেন, পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠের মাত্র ২ শতাংশ এলাকা থেকে বলয়গ্রাস গ্রহন দেখা যাবে। পূর্ণ গ্রাস গ্রহনকালে সূর্যের আলো কমে যাবে, ৫০০ ওয়াটের ভালব ৩০ ওয়াটে নিয়ে আসলে যেমনটা ঘটে ,এ ক্ষেত্রেও তেমনই হবে।

দিনের আলো হঠাৎ কমে যাওয়ায় প্রাণীরা হতভম্ব হয়ে যেতে পারে, পাখিরা আবার ঘুমিয়ে পড়তে পারে, গরু আবার গোয়ালে ফিরতে পারে।

চার ঘন্টার মতো সময়ের মধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রহন দেখা যাবে, তাইওয়ান থেকে শেষ আংশিক গ্রহণ দেখা যাবে। পরে প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় সরে যাবে।
বাংলাদেশ থেকে পূর্ণ বলয়গ্রাস গ্রহণ দেখা যাবে না। দক্ষিণ এশিয়ার এ অঞ্চলে আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে। বাংলাদেশে আংশিক সূর্যগ্রহণ শুরু হবে সকাল ১১ টা ২৩ মিনিটে, শেষ হবে পৌনে দুটোয়। সর্বোচ্চ গ্রহণ দেখা যাবে দুপুর ১টা ১২ মিনিটে। বাংলাদেশে সূর্যগ্রহণ শেষ হবে দুপুর ২টা ৫২ মিনিটে
সূর্যগ্রহণের সময় অনেকেই অতি উৎসাহী হয়ে খালি চোখে গ্রহণ দেখার চেষ্টা করেন। সূর্যগ্রহণ তো বটেই, যে কোনো সময় সূর্যের দিকে সরাসরি তাকানো চোখের মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই সরাসরি না তাকিয়ে ফিল্টার গ্লাস ব্যবহার করা যেতে পারে, ওয়েল্ডিং করার সময় মেকানিকরা যে ধরনের গ্লাস ব্যবহার করেন, সেটাও ব্যবহার করা যেতে পারে। আথবা প্লেটে বা যেকোনো পাত্রে পরিষ্কার পানি নিয়ে তাতে কিছু পরিমাণ গুড়ো হলুদ মিশিয়ে সেই পানিতে সূর্যগ্রহণের প্রতিবিম্ব দেখা যেতে পারে। সাধারণ সানগ্লাস বা চশমা পরে কেউ সূর্যগ্রহণ দেখতে যাবেন না। টেলিস্কোপ বা ক্যামেরার সাহায্যে সূর্যগ্রহণ দেখতে হলে অত্যাধুনিক ফিল্টার ব্যবহার করতে হবে। তা নাহলে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি সরাসরি চোখের ওপর পড়ার সুযোগ পায়। সম্পূর্ণ অন্ধত্বসহ নানা রকম চোখের রোগ হতে পারে।

এ বছর দ্বিতীয়বার সূর্য গ্রহণ দেখা যাবে ১৪ ডিসেম্বর। এটি দক্ষিণ আমেরিকা থেকে দেখা যাবে।

সূত্র : বাসস