করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি মৃত্যুর সংখ্যা ৮শ ছাড়িয়ে গেছে। নানামুখী সীমাবদ্ধতার কারণে কারও কাছেই সুনির্দিষ্ট তথ্য বা পরিসংখ্যান নেই। তবে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন মাধ্যমের তথ্যানুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যু হয়েছে ২৬৫ জন, যুক্তরাজ্যে ২২০ জন, সৌদি আরবে ১৯৭ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৪৬ জন, কুয়েতে ২৫ জন, কাতারে ৬ জন, কানাডায় ৯ জন, ইতালিতে ৯ জন, সুইডেনে ৮ জন, ফ্রান্সে ৫ জন, স্পেনে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া পর্তুগাল, মালদ্বীপ, কেনিয়া, লিবিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও গাম্বিয়ায় একজন করে বাংলাদেশি মারা গেছেন।

বাংলাদেশ মিশনগুলোর রিপোর্ট মতে, মধ্যপ্রাচ্যে করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এর মধ্যে কভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে শুধু সৌদিতে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ১৯৭ বাংলাদেশি। যা সৌদিতে করোনা আক্রান্ত মোট মৃতের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ জানান, সৌদি আরবে করোনাভাইরাসে সংক্রমিতদের মধ্যে অন্তত ৩০ শতাংশই বাংলাদেশি নাগরিক। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের করোনা সেলের তথ্য মতে, এদের মধ্যে মদিনায় সবচেয়ে বেশি এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মারা গেছেন মক্কা ও জেদ্দায়। রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, সৌদিতে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের করোনা সেল বলছে, সৌদি সরকার এখন আর করোনা আক্রান্ত বিদেশিদের নাগরিকত্ব প্রকাশ করছেন না। গত এক সপ্তাহ ধরে কোনো হিসাবই দিচ্ছে না। করোনা আক্রান্তদের মৃত্যুর হারে বাংলাদেশি এগিয়ে থাকা নিয়ে সংশয় পিছু ছাড়ছে না। আরও অন্তত শতাধিক বাংলাদেশির অবস্থা সংকটাপন্ন। সংকটে থাকা সৌদি আরবে প্রায় ৪ হাজার অভিবাসী বাংলাদেশিকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছে রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাস। জেদ্দা কনস্যুলেটের আওতায় আরও প্রায় দুই হাজার অভিবাসীকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের মতো দেশে সাধারণের অসুস্থতা বা চিকিৎসার তথ্য যতটা সম্ভব গোপন রাখা হয়। তাছাড়া ওই দেশগুলাতে যেসব বাংলাদেশি আক্রান্ত তারা বাংলাদেশি বংশো™ভূত তবে অন্য দেশের নাগরিক। এটাও তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে একটি বাধা। প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকদের বিষয়ে নিয়মিত যে রিপোর্ট পাচ্ছেন তাতে বিদেশে কর্মরত প্রায় ৩৫ হাজারের বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক করোনা আক্রান্ত বলে তা মোটামুটি নিশ্চিত। সরকারি রিপোর্ট মতে, বিদেশে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেছে যুক্তরাষ্ট্রে। কমিউনিটি মারফত এটি মোটামুটি নিশ্চিত যে, দেশটিতে আড়াই শতাধিক বাংলাদেশি বংশো™ভূত মারা গেছেন। দ্বিতীয় অবস্থানে ব্রিটেন। কমিউনিটি সূত্রের খবর, কেবল হাসপাতালেই কমপক্ষে ২২০ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিকের প্রাণ কেড়েছে করোনা। ওল্ডহোম বা কেয়ার হোমের হিসাব একত্র করলে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিকের মৃতের সংখ্যা তিন শতাধিক হবে বলে ধারণা দিয়েছেন লন্ডনস্থ মিশন ও বাংলাদেশ কমিউনিটির দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরা। যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনে থাকা বাংলাদেশি কূটনীতিক-কর্মকর্তাদের মতে, করোনায় অনেকেই আক্রান্ত, তবে তাদের হিসাব পাওয়া কষ্টকর।উৎস- বিডি প্রতিদিন