জাতীয় স্বদেশ | তারিখঃ মে ১৮, ২০২০ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 922 বার
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় আম্ফান সোমবার (১৮ মে) দিনের প্রথম ভাগেই সর্বোচ্চ তীব্রতার একটি ‘সুপার সাইক্লোনে’ পরিণত হয়েছে বলে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে। বঙ্গোপসাগরে এ রকম ঝড় এ শতাব্দীতে প্রথম বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ।
এই ঘূর্ণিঝড় বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা নাগাদ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত দীঘা থেকে শুরু করে বাংলাদেশের হাতিয়া দ্বীপের মধ্যবর্তী সমুদ্রতটের কোনো একটি জায়গা দিয়ে উপকূলে আছড়ে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আবহওয়াবিদরা জানান, তীব্রতার মাপকাঠিতে এ ঘূর্ণিঝড় এর মধ্যেই অনেক রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।
দিল্লিতে ভারতের আবহাওয়া বিভাগের মহাপরিচালক মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানান, আম্ফান নামে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া এ ঘূর্ণিঝড় থেকে ২০ মে বুধবার আমরা সবচেয়ে বড় বিপদের আশঙ্কা করছি। সেদিন বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে কোনো একটা সময় এটা উপকূলে আছড়ে পড়বে। মঙ্গলবার থেকেই উপকূলীয় অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টি শুরু হবে। বুধবার সকাল থেকে তার সঙ্গে যোগ হবে তীব্র ঝোড়ো বাতাস।
ঝড়টি এখন উত্তর-উত্তর পূর্ব অভিমুখে এগোচ্ছে, বুধবার এটি পশ্চিমবঙ্গের দীঘা আর বাংলাদেশের হাতিয়ার মাঝামাঝি কোনো একটা এলাকা দিয়ে সমুদ্রতট অতিক্রম করবে। আছড়ে পড়ার সময় বাতাসের বেগ ঘন্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটারের মতো হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ঠিক বছরখানেক আগেই ওড়িশাতে আছড়ে পড়েছিল সাইক্লোন ফণী, তবে এবার আম্পানের আঘাত থেকে ওই রাজ্যটি বেঁচে যেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। কিন্তু ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলের একটা বিস্তীর্ণ অংশ নিয়ে তেমন একটা আশাবাদী হওয়া যাচ্ছে না – যার একটা বড় কারণ আম্ফানের তীব্রতা।
ভারতের বেসরকারি আবহাওয়া পূর্বাভাস সংস্থা স্কাইমেটের প্রধান মহেশ পালাওয়াট জানান, এই শতাব্দীতে প্রাক-মনসুন পর্বে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া এটাই কিন্তু প্রথম সুপার সাইক্লোন। এর আগে ২০০৭ সালের জুনে আরব সাগরে সুপার সাইক্লোন ‘গোনু’ তৈরি হয়েছিল – যেটা পরে ওমানের দিকে সরে যায়।
আম্ফান এর মধ্যেই ঘণ্টায় দেড়শ’ কিলোমিটারেরও বেশি গতিসম্পন্ন ঝোড়ো বাতাস সঙ্গে ‘প্যাক’ করে নিয়েছে। মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এটা একটা ঘূর্ণিঝড় থেকে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে, সেটাও একটা রেকর্ড।
উপকূলের কাছাকাছি এলে এই ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা সামান্য কমবে, তবে তার পরেও এর বিধ্বংসী ক্ষমতাকে খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই বলে জানান পালাওয়াট।
তিনি বলেন, স্থলভূমি থেকে শুকনো বাতাস এসে সিস্টেমটাকে কিছুটা দুর্বল করে দেয় – এই আম্ফানের ক্ষেত্রেও সেটাই ঘটবে। কিন্তু তারপরেও এটা একটা প্রচণ্ড ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় – যার তাণ্ডব আর ক্ষয়ক্ষতি সাধনের ক্ষমতা মারাত্মক। ফলে পুরো উপকূলীয় এলাকা জুড়েই মানুষকে সাবধান থাকতে হবে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা/ সময় সংবাদ
Leave a Reply