পুষ্টি চাহিদা পুরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশে প্রায় দ্বিগুন উৎপাদনক্ষমতা সম্পন্ন উচ্চ ফলনশীল লাল বাহাদুর নামে নতুন জাতের টমেটোর জাত উন্মোচন করা হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন হাইব্রীড টমেটো লাল বাহাদুর। এ জাতের টমেটোর শুধু নামেই নয়, ফলনেরও রয়েছে বাহাদুরী। এর আকার, রং, উৎপাদন সবকিছুতেই বাহাদুরী। এমনকি এ জাতের টমোটা চাষ করে বাহাদুরী দেখাচ্ছেন চাষিরাও।

চাষিরা জানান, গত এক বছর আগে একটি বেসরকারী বীজ কোম্পানী ‘লাল তীর’ মৌলভীবাজারে শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জে ১০ একর করে ৫টি প্রদশর্নী প্লটে এই জাতের টমেটোর পরীক্ষামূলক চাষ করে। তারা বনবেগুনের সঙ্গে গ্রাফটিং করে এ জাত বের করে। তখন কোন নাম না দিয়ে এ জাতের শুধু একটি সাংকেতিক কোড নাম্বার দেয়া হয়েছিল। পরীক্ষামূলক চাষে ভাল সফলতা আসে। পরে এর বীজ ও চারা উৎপাদন করা হয়। এক বছর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে নাম দেয়া হয় গ্রীষ্মকালীন হাইব্রীড টমেটো ‘লাল বাহাদুর’। করোনায় সারাদেশ লকডাউন থাকায় সম্প্রতি ওই কোম্পানী শ্রীমঙ্গলে সংবাদ সম্মেলন করে টমেটোর এই নতুন জাতটি অবমুক্ত করে।

কোম্পানীর ডিভিশনাল ম্যানেজার তাপস চক্রবর্তী জানায়, এতোদিন দেশে কৃষি গবেষনা কেন্দ্র থেকে বের করা বারী-৪ ও বারী-৮ এই দুই জাতের গ্রীষ্মকালীন টমোটা ছিল। কিন্তু কমলগঞ্জ এলাকার কৃষকদের কথা মাথায় নিয়ে তারা এই গ্রীষ্মকালীন হাইব্রীড টমেটোর জাতটি উদ্ভাবন করেন। বীজ এবং গ্রাফটিং এই দুই পদ্ধতিতেই এই জাতের টমেটো চাষ করা যায়। যে কোন উর্বর চাষ উপযোগী জমিতে এ জাত লাগানো যায়। মে থেকে জুন- জুলাই মাসের মধ্যে জমি তৈরী করে বীজ বপন বা চারা লাগাতে হয়। ৬০ থেকে ৬৫ দিনে গাছে ফল আসে। ১৫/২০ দিনের মাথায় গাছ থেকে ফল অহরন করা যায়। এ টমেটোর আকার লম্বাটে গোলাকার। একেকটির ওজন ১২০ থেকে ১৪০ গ্রাম। দের্ঘ্য ৬ থেকে ৭ সে.মি.। রং লাল। প্রতি গাছে সাড়ে ছয় থেকে আট কেজী ফল ধরে। আর একর প্রতি ফলন হয় ১৮ থেকে ২২ টন। এক একর জমি চাষ করতে চাষির খরচ হয় প্রায় ১৫ হাজার টাকা। আর এক একর জমিতে খরচ বাদ দিয়ে চাষির আয় হবে কমকরে ৫০ হাজার টাকা। বাজার বৃদ্ধি হলে লাভের অংশ আরো বেশী হতে পারে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি বলেন, ‘ গ্রীষ্মকালীন হাইব্রীড লাল বাহাদুর টমেটোর জাতটি বারী-৪ ও বারী-৮ থেকেও ভাল মনে হচ্ছে। পরীক্ষামূলক চাষে দেখা গেছে এই জাতের টমোটের সাইজ অনেক বড় এবং রং খুব সুন্দর, একেবারে লাল হয়ে যায়। আমার মনে হচ্ছে এটা ভাল হবে।’