রাজনীতি | তারিখঃ এপ্রিল ১৩, ২০২০ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 586 বার
‘৭৫ এর ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন খন্দকার মোশতাক। ৮৬ দিনের মাথায় ৭ নভেম্বর জিয়া তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করেন। ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। জিয়া সর্বময় ক্ষমতা গ্রহণের পর বঙ্গবন্ধুর ঘাতকদের বাংলাদেশ ত্যাগ করে ব্যাংকক হয়ে লিবিয়া চলে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। এসব কাজে তাঁকে সহায়তা করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তত্কালীন কর্মকর্তা শমসের মবিন চৌধুরী। শমসের মবিন চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধে আহত হলে তাঁকে বঙ্গবন্ধু পূর্ব জার্মানিতে পাঠিয়ে চিকিৎসা করিয়ে এনে পঁচাত্তরের জানুয়ারি মাসে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করেন। জিয়াউর রহমানের আমলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন শমসের মবিন চৌধুর।
খালেদা জিয়ার আমলে তিনি পররাষ্ট্রসচিব পর্যন্ত হয়েছিলেন। এখন তিনি খালেদা জিয়া বা বিএনপির সংস্রব ত্যাগ করেছেন। বঙ্গবন্ধুকে খুনেরপর জিয়া ঘাতকদের বিভিন্ন দূতাবাসে উচ্চপদে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেন। গতকাল ফাঁসি হওয়া আবদুল মাজেদকে সেনেগাল দূতাবাসে পদায়ন করা হয়। পরে ১৯৮০ সালের ২৬ মার্চ তাঁকে বিআইডাব্লিউটিসিতে উচ্চ পদে পদায়ন করা হয়। এরপর তাঁকে সচিব পদে পদোন্নতি দিয়ে তখনকার যুব উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের ‘ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট’ শাখার পরিচালক ও জাতীয় সঞ্চয় পরিদপ্তরের পরিচালক করা হয়।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জেলহত্যার পর ৪ নভেম্বর বঙ্গবন্ধুর খুনিদের একটি বিশেষ বিমানে রেঙ্গুন হয়ে ব্যাংকক পাঠিয়ে দেয়া হয়। সেখান থেকে পাকিস্তান সরকারের দেয়া একটি বিমানে তাদের লিবিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট মুয়ামমার গাদ্দাফি তাদের সাদরে গ্রহণ করেন। তারা বলেন, বাংলাদেশ থেকে তাদের সঙ্গে যান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন পরিচালক, জোট আমলের পররাষ্ট্র সচিব ও রাষ্ট্রদূত এবং বিএনপির চেয়ারপার্সনের সাবেক উপদেষ্টা শমসের মবিন চৌধুরী। সব খুনিকে একসঙ্গে লিবিয়ায় রাখা নিরাপদ নয় মনে করে ১৯৭৬ সালের ৮ জুন জিয়াউর রহমান তাদের ১২ জনকে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেয়ার ব্যবস্থা করেন।
খুনিরা লিবিয়াতে বসে জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধেও নানা ষড়যন্ত্র করতে পারে এই আশংকা থেকেই তাদের চাকরি দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেয়া হয়। তবে হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্বদানকারী লে. কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান ও লে. কর্নেল খন্দকার আব্দুর রশীদ চাকরিতে যোগ দিতে রাজি হননি। তারা জিয়া সরকার ও লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট গাদ্দাফির সঙ্গে সমঝোতা করে সেখানে ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করেন।
জিয়া সরকার যাদেরকে চাকরি দেয় তাদের মধ্যে লে. কর্নেল শরিফুল হক ডালিমকে চীন দূতাবাসে প্রথম সচিব, লে. কর্নেল আজিজ পাশাকে আর্জেন্টিনায় প্রথম সচিব, মেজর একেএম মহিউদ্দিন আহমেদকে আলজেরিয়ায় প্রথম সচিব, মেজর বজলুল হুদাকে পাকিসতানে দ্বিতীয় সচিব, লে. কর্নেল শাহরিয়ার রশিদকে ইন্দোনেশিয়ায় দ্বিতীয় সচিব, মেজর রাশেদ চৌধুরীকে সৌদি আরবে দ্বিতীয় সচিব, মেজর নূর চৌধুরীকে ইরানে দ্বিতীয় সচিব, মেজর শরিফুল হোসেনকে কুয়েতে দ্বিতীয় সচিব, কর্নেল কিসমত হাশেমকে আবুধাবিতে তৃতীয় সচিব, লে. খায়রুজ্জামানকে মিসরে তৃতীয় সচিব, লে. নাজমুল হোসেনকে কানাডায় তৃতীয় সচিব ও ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদকে সেনেগালে তৃতীয় সচিব হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়। ঢাকা থেকে শমসের মবিন চৌধুরী তাদের জন্য পাসপোর্ট তৈরী করে নিয়োগপত্র, ব্যাগ, জিনিসপত্র, নগদ অর্থসহ লিবিয়া যান। আর লিবিয়ায় খুনিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সব কিছু প্রসতুত করেন সেনা কর্মকর্তা নূরুল ইসলাম শিশু। উৎস -বাংলা ইনসাইডার
Leave a Reply