নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার জনতা ব্যাংক বসুরহাট শাখা থেকে গ্রাহকদের ২ কোটির বেশি টাকা আত্মাসাতের ঘটনায় ব্যাংকের সাবেক ক্যাশিয়ার লিটন চন্দ্র দাসকে (৪১) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিকে গ্রাহকদের কোটি টাকা আত্মসাতের খবর ফাঁস হওয়ার পর শত শত গ্রাহক নিজেদের হিসাবের খোঁজ খবর নিতে ব্যাংকে ভিড় করছে।

মঙ্গলবার দুপুরে লিটনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এরআগে সোমবার দিবাগত রাতে কৌশলে কর্মকর্তাদের মাধ্যমে জনতা ব্যাংক বসুরহাট শাখায় ডেকে এনে তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। গ্রেফতার লিটন চন্দ্র দাস সেনবাগ উপজেলার দক্ষিণ মোহাম্মদপুর গ্রামের নারায়ণ ভন্ডের বাড়ির রবিন্দ্র কুমার দাসের ছেলে। সে বর্তমানে নোয়াখালী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের হরিনারায়নপুরে বসবাস করে।

ব্যাংকের কর্মকর্তা ও গ্রাহক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এমপিওভুক্ত স্কুল ও কলেজের দেড় শতাধিক শিক্ষকের বেতনের বিপরীতে নেওয়া ঋণের পরিশোধিত টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে কৌশলে আত্মসাত করে লিটন। একই সময় বিভিন্ন গ্রাহকের হিসাবের আমানতের টাকা জমা না দিয়ে ২ কোটির অধিক টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে লিটনের বিরুদ্ধে। ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে মামলা দায়েরের পর লিটন চন্দ্র দাসকে পুলিশ গ্রেফতার করে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ আত্মসাতের ঘটনা ঘটে। লিটন বর্তমানে লক্ষ্মীপুর জেলার জনতা ব্যাংকের চর আলেকজান্ডার শাখায় ক্যাশিয়ার পদে কর্মরত রয়েছে।

একটি সূত্রে জানা গেছে, লিটন চন্দ্র দাস ও তার সাথে জড়িতরা কয়েকজন ব্যাংক থেকে আত্মসাতকৃত টাকা দিয়ে জেলা শহর মাইজদীতে নিজেদের মালিকানায় বহুতল ভবন নির্মাণ করেছে।

জনতা ব্যাংক বসুরহাট শাখার ম্যানেজার মো. সামছুল ইসলাম জানান, এ পর্যন্ত অভিযুক্ত ক্যাশিয়ার লিটন চন্দ্র দাসের কাছ থেকে প্রায় ১ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। অবশিষ্ট টাকাও উদ্ধার করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তবে এ বিষয়ে গ্রাহদের আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই। আমানতকারী ও গ্রাহকরা তাদের সম্পূর্ণ টাকা ফেরত পাবে।

কোম্পানীগঞ্জ থানার পুলিশ-পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রবিউল হক জানান, জনতা ব্যাংক বসুরহাট শাখার ম্যানেজার মো. সামছুল ইসলাম’এর দায়ের করা মামলায় সাবেক ক্যাশিয়ার লিটন দাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আত্মসাতকৃত টাকা উদ্ধার ও ঘটনার সাথে আর কারা জড়িত রয়েছে তা উদঘাটন করার জন্য আসামী লিটনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।