মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে দুই ধরনের ভিসা বন্ধ হওয়ার পথে। এতে চাকরি হারানোর আশঙ্কায় রয়েছে বাংলাদেশিসহ বহু প্রবাসী। গত রোববার দেশটির জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে ভিসা বন্ধের বিষয়টি জানানো হয়।

যে দুটি ভিসা বন্ধ হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে সেগুলোর একটি সেলস প্রমোটার, অন্যটি পারচেজ প্রমোটার। ভিসা দুটির আওতায় ওমানে বাংলাদেশিসহ বহু প্রবাসী বিভিন্নরকম পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের প্রতিনিধিত্ব করে থাকেন।

রোববার দেশটির জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সেলস ও পারচেজ প্রমোটার ক্যাটাগরিতে প্রবাসীদের বিদ্যমান ভিসা পুনর্নবীকরণ করা হবে না। একইসঙ্গে ভিসা শেষ হওয়ার পর প্রত্যেক ভিসাধারী প্রবাসীকে নিজ নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে। বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্ত সুনিশ্চিতের দাবি করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে ওমানের জনশক্তি মন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন নাসের আল বাকরীর পেশ করা যুক্তি ৪৭ /২০২০’ র বিধান উপস্থাপন করা হয়। যেখানে বলা হয়েছে- বিদেশি বাদে এখন থেকে ওমানের নাগরিকরাই সেলস ও পারচেজ প্রমোটার হিসেবে কাজ করতে পারবে। এ কারণে ক্ষেত্রটিতে প্রবাসীদের পতাকা (কর্ম-অনুমতি লাইসেন্স) নবায়নের আর সুযোগ থাকবে না। তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হলেও নতুন করে নবায়ন করা হবে না। এবং তাদের অবশ্যই দেশে ফিরে যেতে হবে।

ওমানের স্থানীয় গণমাধ্যম ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক গণমাধ্যম খালিজ টাইমস বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। খবরে ওমানের জনশক্তি মন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন নাসের আল বাকরীর বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, দেশটির নাগরিকদের সেলস ও পারচেজ প্রমোটার হিসেবে কাজ করার স্বাধীনতা দিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতদিন বিদেশিরা পতাকার মাধ্যমে এ দুটি ক্যাটাগরিতে ভিসা নিয়ে এসে কাজ করতেন। তাদের বিদ্যমান ভিসা পুনর্নবীকরণ করা হবে না, এমনকি নতুন করে ভিসাও দেওয়া হবে না।

ওমানের জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্তে কপাল পুড়বে বাংলাদেশিসহ বহু প্রবাসীর। এ দুটি ভিসার আওতায় যারা কাজ করছেন, ঘোষণার পর চাকরি হারানোর আশঙ্কায় আছেন মেয়াদ থাকা ভিসা ও ওয়ার্ক পারমিটধারীরা।

যাদের মেয়াদ শেষের পথে তাদের দেশে ফিরে আসতে হবে এটা এক প্রকার নিশ্চিত। তবে যাদের ভিসা ও ওয়ার্ক পারমিট দুটোই আছে তাদের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত কী হবে তা জানায়নি ওমানের জনশক্তি মন্ত্রণালয়। তবে আইনটি শুধুমাত্র সেলস ও পারেচজ প্রমোটারদের জন্য বলবৎ থাকবে। অন্যান্য ভিসায় বা ওয়ার্ক পারমিটে আসা প্রবাসীরা এর আওতায় পড়বে না।

বিষয়টি নিয়ে জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, মন্ত্রীর সিদ্ধান্ত পরিষ্কার, বর্তমান ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ভিসাধারীদের দেশে ফিরে যেতেই হবে। এই ক্যাটাগিরিতে নতুন কোনো ভিসাও দেওয়া হবে না। তারা যদি অন্য কাজের অনুমতি নিয়ে আসে, সেটি বিবেচনা করা যেতে পারে।

ওমানে বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত গোলাম সরোয়ার আমাদের সময়কে জানিয়েছে, জনশক্তি মন্ত্রী আল বাকরীর পেশ করা যুক্তি ৪৭/২০২০ অনুযায়ী সেলস ও পারচেজ প্রমোটার ভিসায় বাংলাদেশির সংখ্যা খুবই কম। এতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপর কোনো প্রভাব পড়বে না।