পদ্মাসেতুর ৩০ ও ৩১ নম্বর পিলারে ২৪তম স্প্যান ‘৫-এফ’ বসানোর কার্যক্রম চলছে। শরিয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে পিলারে স্প্যানটি বসানোর মাধ্যমে দৃশ্যমান হবে সেতুর ৩৬০০ মিটার। আজ মঙ্গলবার সকালে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারে অস্থায়ীভাবে রাখা স্প্যান নিয়ে রওয়ানা করে ভাসমান ক্রেন। সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে নির্ধারিত পিলারের সামনে এসে পৌঁছায়।

২৩তম স্প্যান বসানোর ৯ দিনের মাথায় ২৪তম স্প্যানটিও বসানো হচ্ছে। সবকিছু অনুকূলে থাকলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এ স্প্যান স্থাপন শেষ হবে।

প্রকৌশলী সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে স্প্যান বহনকারী ক্রেনটি নোঙর করার কাজ চলছে। এরপর তোলা হবে পিলারের উচ্চতায়। সেতুর ৪২টি পিয়ারের মধ্যে ৩৮টি পিলারের কাজ শেষ। বাকি আছে ৪টি পিলারের কাজ। যা শেষ হবে আগামী এপ্রিলে। আর পদ্মাসেতুতে ৪১টি স্প্যানের মধ্যে ২৩টি বসানো শেষ হয়েছে। বাকি আছে ১৮টি। বাকিগুলো আগামী জুলাইয়ের মধ্যে বসে যাবে।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয়েছিল পদ্মাসেতুর নির্মাণকাজ। সেতু চালু হলে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের ২৫ জেলার সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে।

পদ্মাসেতুতে মোট ৪১টি স্প্যান বসবে। ইতোমধ্যে ৩৭টি স্প্যান বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে। এর মধ্যে পিলারের ওপর বসানো হয়েছে ২৩টি স্প্যান। আগামী জুলাইয়ের মধ্যেই সব স্প্যান বসিয়ে ফেলা হবে।

একই সঙ্গে চলছে সেতুর রোডওয়ে ও রেলওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজ। ইতোমধ্যে সেতুতে ৫৭৩টি রেলওয়ে স্লাব ও ২৫০টি রোডওয়ে স্লাব বসানো হয়েছে।

মূল সেতু নির্মাণ করছে চীনের চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন। নদীশাসনের কাজে নিয়োগ করা হয়েছে চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশনকে। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোনেম লিমিটেড।

এই সেতুর নির্মাণকাজ তদারকি করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বুয়েট ও কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস। এই সেতু নির্মাণের ফলে দেশের বাণিজ্য, উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে জিডিপিও (মোট দেশজ উৎপাদন) দেড় থেকে দুই শতাংশ বাড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এই সেতু তৈরি হলে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে এবং দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার প্রায় ছয় কোটি মানুষের জীবনযাত্রায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। শুধু তাই নয়, রাজধানী ঢাকাসহ পুরো দেশের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে।