অপরাধ সংবাদ, কৃষি কথা, জাতীয় স্বদেশ | তারিখঃ জুন ৭, ২০১৮ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 930 বার
ডা।জাহিদুল আলম কাদির ২০০২ সালে এমবিবিএস পাস করেছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে। ২০১৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন বিদ্যায় (এ্যানেসথেসিয়া) ডিপ্লোমা করেন। কিন্তু তিনি নিজের পেশায় না থেকে চুক্তিতে খুন করেন। অস্ত্রের অবৈধ ব্যবসাও রয়েছে তার। এমনকি নিজের বাড়িতে অস্ত্রের ভাণ্ডারও গড়ে তুলেছেন তিনি।
ছাত্র জীবন থেকেই বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহের শখ ছিল ডা. জাহিদুল আলমের। নতুন অস্ত্র সংগ্রহের ঝোঁক থেকেই অস্ত্র ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে এ ডাক্তার। হাতের নিশানা নিখুঁত থাকায় কনট্রাক্ট কিলার হয়ে উঠে জাহিদুল। বেশকিছু কিলিংয়ে সে অংশ নিয়েছিল বলে জানায় পুলিশ।
সম্প্রতি রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও গাবতলী এলাকা থেকে ডা. জাহিদুল আলম ও তার স্ত্রী মাসুমা আক্তারকে গ্রেফতার করে কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। তাদের কাছ থেকে ১৫টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১ হাজার ৬২২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। সম্প্রতি সিলেটে একজন সংসদ সদস্যকে ‘কন্ট্রাক্ট কিলিং’ করার খবর ফাঁস হওয়ার পর বিষয়টি তদন্ত করে তাদেরকে গ্রেফতার করে।
‘গত ১৫ মে যাত্রাবাড়ি থেকে দুইটি পিস্তলসহ ডা. জাহিদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুই দফা রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সবকিছু তার স্ত্রী জানে বলে জানায় সে। এরপর গত ৩ জুন তার স্ত্রী মাসুমা আক্তারকে গাবতলী থেকে ১ টি পিস্তলসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তারপর তাদেরকে মুখমুখি রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিস্তারিত তথ্য বেরিয়ে আসে।’
‘তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ৭ জুন ভোরে তাদের ময়মনসিংহের বাঘমারা এলাকার ফ্ল্যাট থেকে আরো ১২ টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলোর মধ্যে .২২ বোরের রাইফেল ৩টি, ৩০৩ রাইফেল ১টি, .৩২ বোর রিভালবার ৪টি, ২২ রিভালবার ১টি, ৭.৬৫ পিস্তল ৫টি, .২৫ পিস্তল ১ টি এবং ১৬২২ রাউন্ড গুলি।’
উদ্ধার করা অস্ত্রগুলোর ব্যাপারে সিটিটিসি প্রধান বলেন, জাহিদুলের সবগুলো অস্ত্রই বৈধ ডিলারের কাছ থেকে সংগ্রহ করা। কিছু অস্ত্র কেনার পর তিনি নিজে মোডিফাই করেছেন। যেসব ডিলারের কাছ থেকে অস্ত্রগুলো সংগ্রহ করা হয়েছিল তাদের নাম আমাদের কাছে এসেছে। যাচাই-বাছাই শেষে সেসব ডিলারের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সিটিটিসি প্রধান বলেন, কতটা কিলিংয়ে অংশ নিয়েছিল এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে ২০০৩-০৪ সাল থেকে সে এই কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। অস্ত্র ব্যবসার সুবাদে বিভিন্ন এলাকার দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীদের সঙ্গেও তার সখ্যতা ছিল।
মনিরুল ইসলাম বলেন, রাইফেলগুলো জার্মানি, চেক প্রজাতন্ত্র, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি। পিস্তলগুলো ব্রাজিল, তুরস্ক ও অস্ট্রিয়ার। ডা. জাহিদুল অবৈধভাবে লাইসেন্সবিহীন বিদেশি অস্ত্র সংগ্রহ করে উচ্চ মূল্যে বিক্রি করতেন। তার সাঙ্গপাঙ্গদের বলতেন, পুলিশ কখনো তাকে গ্রেফতার করতে এলে কমপক্ষে তিন দিন তিনি ঠেকিয়ে রাখতে পারবেন।
জানা গেছে, জাহিদুলের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। পাবনায় বড় হয়েছেন। উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর থেকে ময়মনসিংহে থেকে যান। প্রথমে একজন চিকিৎসককে বিয়ে করেছিলেন। শোধরাতে না পেরে ওই চিকিৎসক চলে যান। পরে নিম্নবিত্ত পরিবারের কম শিক্ষিত এক নারীকে বিয়ে করেন জাহিদুল। তারপর তাকেও অপরাধে জড়াতে বাধ্য করেন।
Leave a Reply