বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘গোপন এবং দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তির রেশ কাটতে না কাটতেই সম্প্রতি আবারো খেলা দেখার নাম করে যে মর্যাদাহানির নজির স্থাপিত হলো তা একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে দেশবাসী বিব্রত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কলকাতা সফর করে আসলেন রাষ্ট্রীয় কোষাগারের টাকা খরচ করে। বলা হচ্ছে, তিনি নাকি সরকারি আমন্ত্রণে কলকাতা গিয়েছেন। একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে আমরা লজ্জিত, বিস্মিত, আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে কোন অভ্যর্থনা পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী তো দূরের কথা কোন সিনিয়র সচিবকেও পাঠানো হয়নি। তাকে রীতিমতো অপমান করা হয়েছে।’

মঙ্গলবার দুপুরে বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, জনগণের অধিকার হরণ করে ভোটের আগের রাতের ভোটে প্রধানমন্ত্রী হয়ে তিনি যখন দাম্ভিকতার সহিত জনসম্মুখে বক্তব্য রাখতে পারেন, তিনি তো একটি স্বাধীন দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েও পার্শ্ববর্তী দেশের কোন প্রটোকল না পেলেও লজ্জিত না হয়ে যে উল্লসিত হবেন এটাই স্বাভাবিক। এসব কর্মকাণ্ডে দেশবাসী লজ্জিত হয়, জাতি হিসেবে বাংলাদেশের জনগণের মান সম্মানের হানী ঘটলেও প্রধানমন্ত্রীর টনক নড়ে না। তিনি বাংলাদেশের মানুষের আত্মমর্যাদা, মান সম্মান মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, এখন কথায় কথায় বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নাকি সর্বোচ্চ পর্যায়ে। আসলে অপ্রিয় হলেও বাস্তবতা এখন এমনি পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে, শেখ হাসিনা এখন রাষ্ট্রের টাকা খরচ করে, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে তথাকথিত উচ্চপর্যায়েই ঘুরছেন, উড়ছেন। কিন্তু নিচে যে স্বাধীন দেশের আঠারো কোটি মানুষের স্বার্থ জড়িত রয়েছে, সম্মান জড়িত রয়েছে, সেগুলো এখন নতজানুর চোরাবালিতে ডুবে যাচ্ছে। তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বাংলাদেশ বঞ্চিত। ‘গরু চোর’ অপবাদ দিয়ে প্রায়শ:ই সীমান্তে বাংলাদেশের নাগরিকদের নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। অথচ প্রতিবাদ করার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেছে বর্তমান সরকার। শিরদাঁড়া সোজা না থাকলে, শির উঁচু করে কথা না বলতে পারলে, বুকের পাটা না থাকলে এমনই হয়। গদিরক্ষা বিপজ্জনক হবে ভেবেই এই সরকার প্রতিবাদ করতে পারে না।