দেশের আড়াই শতাধিক জাতের আমের ভিড়ে নিজের অনন্য অবস্থানকে জানান দিচ্ছে সম্প্রতি উদ্ভাবিত ‘গৌড়মতি’। আর মিষ্টির মাত্রা ২৭ টিএসএস নিয়ে সবচে মিষ্টি আমের মুকুট বহন করছে ‘গৌড়মতি’। সেপ্টেম্বরে শুরু হয়েছে এই আমের মৌসুম। নতুন উদ্ভাবিত এই আমের বাণিজ্যিক চাষে সফল হয়েছেন নাটোরের আদর্শ ফল উৎপাদক গোলাম মওলা।

২০১২ সালে এই জাতের আম উদ্ভাবনের পরের বছরে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার জামনগরের খামারে মাত্র আটটি চারা দিয়ে ‘গৌড়মতি’র চাষ শুরু করেন গোলাম মওলা। প্রথমবার চার মণ ফলন পান। সেপ্টেম্বরে আমের অফ সিজন হওয়ায় স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন পাঁচশ টাকা কেজি দরে।

বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় গোলাম মওলা তৎপর হন পরিধি বাড়াতে। জেলার মধ্যে সবচে বড় পরিসরে গৌড়মতির বাগান করেছেন তিনি। ২৪ বিঘার বাগানে আছে দুই হাজার গাছ। এগুলোর মধ্যে চলতি মৌসুমে একশ গাছে আম ধরেছে। বর্তমানে চলছে বিপণন কার্যক্রম। একেকটি আমের গড় ওজন সাতশ গ্রাম।

স্থানীয় বাজারের গণ্ডি পেড়িয়ে গোলাম মওলার খামারের আম পৌঁছে যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। স্মারক শুভেচ্ছা হিসেবে গেছে প্রধানমন্ত্রী ও কৃষিমন্ত্রীর দপ্তরে। অসময়ের আম হওয়ায় চাহিদার ব্যাপকতার কারণে বিপণন করতে কোথাও তাকে যেতে হয়নি। আগ্রহীরা বাগানে এসেই কৌতূহল ভরে আমের ফলন দেখছেন, কিনছেন।

‘গৌরমতি’র পরিধি বাড়ানোর প্রয়োজনে খামারে চারা উৎপাদন করলেও আগ্রহীদের কাছে প্রতিটি চার দুই থেকে তিনশ টাকায় বিক্রি করছেন।

বাগাতিপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার মোমরেজ আলী বলেন, শুধু উপজেলা জেলা নয় নাটোর জেলায় গৌড়মতির চাষে অনন্য অবদান রেখেছেন গোলাম মওলা। তার এই অবদান গৌরবের।

এই আমের নামকরণ সম্পর্কে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (অব.) ফল গবেষক এসএম কামরুজ্জামান বলেন, প্রাচীন বাংলার ‘গৌড়’ এলাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের অবস্থান হওয়ায় ‘গৌড়’ শব্দটি এসেছে আর ‘মতি’ হচ্ছে মহামূল্যবান- এই দুয়ের সমন্বয়ে উদ্যান তত্ত্ববিদদের বৈঠকে আমার প্রস্তাবনায় নামকরণ করা হয় ‘গৌড়মতি’। উৎস -ইত্তেফাক