বাংলাদেশে অথবা ভারতে যাদু, টোনা, উচ্চাটন, মারণ, বশীকরণ, বান মারা, তাবিজ করা বা কুফরি যাদু— এই শব্দগুলি সম্বন্ধে কমবেশি আমরা অনেকেই পরিচিত। এইগুলিকে এক কথায় ‘কালা যাদু’ বা ব্ল্যাক ম্যাজিক বলে। এগুলি বস্তুত সেই তুকতাক প্রক্রিয়া।

কালা যাদু এক ধরনের সুপার ন্যাচারাল পাওয়ার, যাকে খারাপ উদ্দেশ্যে অন্যের ক্ষতি করার জন্য প্রয়োগ করা হয়ে থাকে।

পৃথিবীতে এমন কোনও দেশ নেই যেখানে কালা যাদু চর্চা না হয়ে থাকে। হিন্দু ও বৌদ্ধরা বহু প্রাচীন কাল থেকেই কালা যাদুর সাহায্য নিয়ে আসছে। হিন্দু তন্ত্রসাধনায় মূলত কালা যাদুরই চর্চা হয়ে থাকে।

তন্ত্রে উচাটন, মারণ, বিদ্বেষণ, স্তম্ভন, আকর্ষণ (মোহন) ও বশীকরণ— এই ছ’টি প্রক্রিয়াকে আভিচারিক ষটকর্ম বলে। এগুলি ব্ল্যাক ম্যাজিক।

বশীকরণের সাহায্য নেওয়াটা আজকাল বাংলাদেশ ,ভারত ও ইউরো আমেরিকার অনেকের কাছে খুবই প্রচলিত। বশীকরণ পুরোপুরি কালা যাদুরই একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ।

কালা যাদু যারা চর্চা করে তারা বেশির ভাগই পেশাদার হিসেবে এই কাজ করে থাকে। পৃথিবীর সব দেশেই কালা যাদুর বেশি সাহায্য নিয়ে থাকেন কিছু মহিলা, তাঁদের মধ্যে শিক্ষিত ও তথাকথিত অশিক্ষিতের কোনও তফাৎ নেই।

অনেকেই কামরূপ কামাখ্যা ও তারাপীঠে যান ভিতরে ভিতরে কালা যাদুর ভাল ওঝার সন্ধানে। প্রতি দিন খবরের কাগজে অসংখ্যক তান্ত্রিকের নামে বিজ্ঞাপন দেখতে পাওয়া যায়। এরা অনেকেই কালা যাদুর সাহায্য নেওয়ার লোক খোঁজে।

এই মুহূর্তে সারা ভারতে কালা যাদুর পীঠস্থান হিসেবে অসমের মেওং বিশেষ ভাবে খ্যাত। পৃথিবীর বহু দেশ থেকে বহু পুরুষ ও মহিলা এখানে এসে থাকেন কালা যাদুর সাহায্য নেওয়ার জন্য। আজকের বেঙ্গালুরু অতীতে দক্ষিণ ভারতে কালা যাদুর পীঠস্থান হিসেবে খ্যাত ছিল।আমাদের দেশে অনেকে রাঙ্গামাটির আসাম বস্তিতে যান তান্ত্রিকের খোঁজে ।

কালা যাদুর ভয়ঙ্কর প্রভাব থেকে মুক্তি পেতে সব সময় বিশুদ্ধ শক্তির সাহায্য নেওয়া যায়। নিজেদের আরাধ্য দেবতা ও গুরুকে স্মরণ করতে পারেন।

এ বার আমরা আলোচনা করব, কালা যাদুর গুহ্যক্রিয়া আমাদের অজ্ঞাতসারে কী ভাবে ক্ষতি করে থাকে। আর কোন ক্ষতিগুলি কালা যাদু থেকে হয়ে থাকে।