জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আসিনুল ইসলাম মাহমুদ দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ঘোষণা করায় দলের গঠনতন্ত্র বিরোধী কাজের অভিযোগ এনে ব্যারিস্টার আনিস, ফখরুল ইমামসহ জড়িতদের পার্টি থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন দলের অধিকাংশ প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্য। শুক্রবার বিকেলে জাতীয় পার্টির বনানীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রেসিডিয়াম ও সংসদ সদস্যদের যৌথ সভায় এই দাবি উঠে বলে গণমাধ্যমকে জানান একাধিক প্রেসিডিয়াম ও সংসদ সদস্য।

সূত্র জানায়, বৈঠকে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম, ফখরুল ইসলামকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে পার্টি থেকে। আর আগামী ৩০ নভেম্বর জাতীয় কাউন্সিল হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জাপার সর্বোচ্চ পর্যায়ের এই বৈঠকে ৩৪জন এমপি ও সংসদ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে রওশন এরশাদকে চেয়ারম্যান করার বিষয়টি প্রত্যাখান করা হয়। বৈঠকের আগে বেলা চারটায় রংপুর-৩ আসনের প্রার্থীদের নিয়ে পার্লামেন্টারী বোর্ডেও সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সূত্র জানায়, রংপুর মহানগর সেক্রেটারি এসএম ইয়াসিরকে রংপুর-৩ আসনের জন্য দলীয় মনোনয়র দেওয়া হচ্ছে। প্রেসিডিয়ামের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। পার্টিও চেয়ারম্যান জিএম কাদের, কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, গোলাম কিবরিয়া টিপু, সাহিদুর রহমান টেপা, অ্যডভোকেট শেখ মো. সিরাজুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম, মাসুদ পারভেজ সোহেল, সুনীল শুভ রায়, হাজী সাইফুদ্দিন আহম্মেদ মিলন, মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, কাজী মামুনুর রশীদ, আলমগীর সিকদার লোটন প্রমুখ।

এদিকে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম, ফখরুল ইমাম, মুজিবুল হক চুন্নুসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পার্টি অফিসের সামনে বিক্ষোভ করে বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এসময় পার্টিও যুগ্ম মহাসচিব হাসিবুল ইসলাম জয় উপস্থিত বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, দলকে ভাঙ্গার জন্য যারা বিপথগামী হচ্ছেন, যারা এইচ এম এরশাদের নির্দেশ অমান্য করছেন তাদের তৃণমূল নেতারা প্রতিহত করবেন। ইতিমধ্যে সারাদেশে তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।

এদিকে বৈঠকের মাঝখানে বেরিয়ে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, প্রেসিডিয়ামের বৈঠকে বৃহষ্পতিবার। পার্টির একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যানকে চেয়ারম্যান ঘোষণা করে গঠনতন্ত্র বিরোধী কাজ করেছেন। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পার্টির প্রেসিডিয়ামের সভায় আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, পার্টির একটি কুচক্রি মহল দলের বিরুদ্ধে চক্রান্ত চালাচ্ছে। তাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সারাদেশের নেতাকর্মীরা অসন্তোষ প্রকাশ করছে। জাতীয় পার্টি চলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এর বাইরে কিছু করা সম্ভব নয়। গত ১৭ আগষ্ট অনুষ্ঠিত প্রেসিডিয়ামের সভায় ২৬জনই বলেছেন, পার্টিও চেয়ারম্যানই সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা হবেন। জিএম কাদেরকে সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা করার জন্য পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাসাহ ১৫ জন সংসদ সদস্যের সম্মতিপত্রসহ স্পিকারের কাছে পাঠানো হয়েছে।

ফিরোজ রশীদ বলেন, এইচ এম এরশাদ গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সিদ্ধান্ত দিয়ে গেছেন। তার অবর্তমানে পার্টির চেয়ারম্যান হবেন তার ছোট ভাই জিএম কাদের। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এরশাদ নিজেও নিজেকে সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা করেছেন। এককভাবে পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদকেও উপনেতা করেছেন। এখন যারা বলছেন, পার্লামেন্টারী পার্টির সভার কথা বলছেন তা ঠিক নয়। গঠনতন্ত্রেও কোথাও এমনটি নেই।

তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি মানেই এরশাদ। আর এরশাদ মানেই জিএম কাদের পার্টির চেয়ারম্যান। এ সময় পাশে বসা পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন বাবলুও জিএম কাদের পার্টির চেয়ারম্যান এর পক্ষে নানান যুক্ত তুলে ধরেন।সূত্র-আমাদের সময়