কৃষি কথা | তারিখঃ আগস্ট ৩০, ২০১৯ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 784 বার
চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে চাষ হচ্ছে মসলা জাতীয় ফসল গোল মরিচ। উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের কয়লামুখ এলাকায় পাহাড়ি ঢালু জমিতে গোল মরিচ চাষ করছেন ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠীরা। মরিচ চাষে সহযোগিতা করছে স্থানীয় এনজিও সংস্থা অপ্কা।
উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের কয়লামুখ এলাকায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নারী মালতী ত্রিপুরা ও ময়ূরী রানী ত্রিপুরা ২৫শতক ঢালু জমিতে ২টি গোল মরিচ ক্ষেত করেছেন। ক্ষেতে ১২৫টি পাকা খুঁটি রয়েছে। প্রতিটি খুঁটিতে ৪টি করে গোল মরিচের চারা রোপণ করা হয়েছে। চারাগুলো বড় হয়ে খুঁটির সাথে জড়িয়ে উপরে উঠে গেছে।
ইতিমধ্যে গোল মরিচের ফুল আসতে শুরু করেছে। মালতী ত্রিপুরাকে আইএফএডির মাধ্যমে আর্থিক সহযোগিতা করেছে স্থানীয় এনজিও সংস্থা অপ্কা। সার্বিক সহযোগিতা করছে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)। এভাবে অনেকেই সেখানে গোল মরিচ চাষ শুরু করেছে।
মালতী ত্রিপুরা জানান, তিনি স্থানীয় অপ্কার সহযোগিতায় ২৫ শতাংশ অনাবাদি জমিতে একটি গোল মরিচ ক্ষেত করেছেন। ইতিমধ্যে মরিচ গাছে ফুল ও ফল আসতে শুরু করেছে। আশা করা যাচ্ছে চলতি বছরের শেষের দিকে তিনি শুকনো গোল মরিচ বাজারে বিক্রি করতে পারবেন।
অপকার ভেলুচেঞ্জ ফ্যাসিলিটি কর্মকর্তা ও গোল মরিচ চাষ প্রকল্পের সমন্বয়ক গৌতম বিশ্বাস জানান, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে এনজিও সংস্থা অপকা গোল মরিচ চাষের এই পাইলট প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ইতিমধ্যে মিরসরাই ও ফটিকছড়ির ২০টি গরীব পরিবারকে গোলমরিচ চাষের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করা হচ্ছে।
পাহাড়ের ঢালু অনাবাদি জমিতে চাষ করা হচ্ছে গোল মরিচ। একটি গোল মরিচ ক্ষেত চাষ করতে প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে। একটি ক্ষেতের জন্য ১২৫টি পাকা খুটির প্রয়োজন হয়। প্রতিটি খুঁটির দাম ৪শত টাকা। একটি খুঁটিতে ৪টি চারা রোপণ করতে হয়। প্রতিটি চারার দাম ৫০ টাকা। সব মিলিয়ে প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ পড়ে। রোপণের তিন বছরের মধ্যে ফল আসতে শুরু করে। যা এক টানা ১৫ থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত দিয়ে আসবে। প্রতিটি খুঁটি থেকে বছরে কমপক্ষে ৪ কেজি কাঁচা গোল মরিচ পাওয়া যাবে। ৪ কেজি গোল মরিচ শুকালে পাওয়া যাবে দেড় থেকে দুই কেজি শুকনো গোল মরিচ। যার আনুমানিক মূল্য ১৫’শ থেকে ২ হাজার টাকা।
এভাবে ১২৫টি খুঁটি অর্থ্যাৎ ৫০০টি গাছ থেকে প্রায় ২৫ কেজি শুকনো বিক্রয়ের উপযোগী গোল মরিচ পাওয়া যায়। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় আড়াই লাখ টাকা। এছাড়া চারা বিক্রি করে বাড়তি আয় করা সম্ভব। অনেকে গোল মরিচ ক্ষেতে হলুদ ও আদা রোপণ করে সমন্বিত চাষ করতে পারেন।
উপজেলা সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কাজী নুরুল আলম জানান, করেরহাট ইউনিয়নের কয়লা এলাকায় এনজিও সংস্থা অপকার সহযোগিতায় কয়েকটি গোল মরিচ ক্ষেত গড়ে উঠেছে। করেরহাট ইউনিয়নে নিয়োজিত কৃষি অফিসের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা তাদের বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করে থাকেন।
এদিকে গোল মরিচ ক্ষেত পরিদর্শনে আসেন বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি ইতালির নাগরিক কেটিং ক্রেস্টা ও জান্স। তারা গোল মরিচ ক্ষেত পরিদর্শন করে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
অপকার নির্বাহী পরিচালক মো. আলমগীর জানান, মীরসরাই ও ফটিকছড়ি উপজেলা দরিদ্র ২০টি পরিবারকে গোল মরিচ ক্ষেত করে দেওয়া হয়েছে। অপকা থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা, ১২৫টি পাকা খুঁটি ও ৫০০টি চারা দিয়ে সহযোগিতা করা হয়েছে। বিশেষ করে অনাবাদি পাহাড়ি ঢালু জমিতে গোল মরিচ চাষ হয়ে থাকে।নিরাপদ নিউজ
Leave a Reply