জাতীয় স্বদেশ | তারিখঃ আগস্ট ১০, ২০১৯ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 687 বার
দেশের ৩২ টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির দায় নেবে না বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এমনকি তাদের সনদও বৈধ হবে না বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তাই তথ্য যাচাই-বাছাই করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরামর্শ দিয়েছে ইউজিসি।
বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। ভর্তি মৌসুম সামনে রেখে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতেই এ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে বলে ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে।
ইউজিসি সূত্রমতে, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটির বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ক্যাম্পাস চালানোর অভিযোগ রয়েছে। কয়েকটির বিরুদ্ধে রয়েছে অননুমোদিত প্রোগ্রাম চালানোর অভিযোগ। কয়েকটিতে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রেই নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এছাড়া সনদ বাণিজ্যর অভিযোগ রয়েছে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে। তাই শিক্ষার্থীদের খোঁজ খবর নিয়ে ভর্তির পরামর্শ দিয়েছে ইউজিসি।
জানা গেছে, বর্তমানে ১০৫ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৯৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কার্যক্রম চালু আছে। এ চালু বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৩২ টির ব্যাপারে সতর্কতা জারি করলো ইউজিসি। শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে সতর্কতা জারির করা হয়েছে যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে : রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকা), রূপায়ন একেএম শামসুজ্জোহা বিশ্ববিদ্যালয় (নারায়ণগঞ্জ), জেডএনআরএফ ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট সাইন্সেস (ঢাকা), আহছানিয়া মিশন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রাজশাহী), শাহ মখদুম ম্যানেজমেন্ট ইউনিভার্সিটি (রাজশাহী), খান বাহাদুর আহছানুল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (খুলনা), ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি (বরিশাল), ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইউনিভার্সিটি (ঢাকা), ইউনিভার্সিটি অব ব্রাক্ষণবাড়িয়া, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ব্রিটানিয়া ইউনিভার্সিটি, সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি (ঢাকা), সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা, কুইন্স ইউনিভার্সিটি, দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটি, এনপিআই ইউনিভার্সিটি (মানিকগঞ্জ), ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলেজ (বরিশাল), টাইম ইউনিভার্সিটি (ফরিদপুর), ফার্স্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটি (চুয়াডাঙ্গা), ইবাইস ইউনিভার্সিটি (ঢাকা), জেডএইচ সিকদার বিশ্ববিদ্যালয় (শরীয়তপুর), গণ বিশ্ববিদ্যালয় (সাভার), ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি, শান্তমারিয়ম ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভ, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি।
উল্লিখিত তালিকার প্রথম ৯ টি বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যক্রমই শুরু হয়নি। তাই যদি এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনি ভর্তি হন তবে তার দায়ভার আপনার।
এছাড়া ইবাইস ইউনিভার্সিটিতে মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব আছে। বর্তমানে এটি ঠিকানাবিহীন বিশ্ববিদ্যালয়। সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি এবং সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ নিয়ে মালিকানা দ্বন্দ্বের পাশাপাশি মামলাও রয়েছে। কুইন্স ইউনিভার্সিটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। মামলার রায় নিয়ে এটিও পরিচালনার অনুমতি পায়।
কিন্তু শর্ত মেনে এক বছরের মধ্যে এর কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি বলে ইউজিসি সূত্র জানিয়েছে। দ্য ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা নিয়ে মামলা পাল্টা মামলা চলছে। ২০১৭ সালের এপ্রিলে সরকার হাইকোর্টের নির্দেশে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়। এ কথাটিও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করার নির্দেশনা আছে বলে ইউজিসি সূত্র জানায়।
সূত্র জানায়, তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় অননুমোদিত ক্যাম্পাস চালাচ্ছে। মানিকগঞ্জে স্থাপনের অনুমতিপ্রাপ্ত এনপিআই ইউনিভার্সিটি ঢাকায় ফার্মগেটে ক্যাম্পাস চালাচ্ছে অনুমতি ছাড়াই। বরিশালের ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলেজও চালাচ্ছে অবৈধ ক্যাম্পাস। ইউজিসি গত কয়েক মাসে ফরিদপুরের টাইম ইউনিভার্সিটি এবং চুয়াডাঙ্গার ফার্স্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটি বন্ধ করে দেয়ার সুপারিশসহ প্রতিবেদন পাঠিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে।
এছাড়াও শরীয়তপুরের জেডএইচ সিকদার বিশ্ববিদ্যালয় ও সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয় অননুমোদিত প্রোগ্রাম চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে ইউজিসি। এর মধ্যে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে উচ্চ আদালতে একাধিক মামলা চলমান। তাই ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে খোঁজ খবর নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলা হয়েছে ইউজিসি থেকে।
অননুমোদিত ক্যাম্পাস চালাচ্ছে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, শান্ত-মারিয়ম ইউনিভার্সিটি, ও ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তির ব্যাপারে সতর্কতা জারি করেছে ইউজিসি।
Leave a Reply