ভারতীয় পর্যটকরা বিদেশের হোটেলে চুরি করে দেশের নাম ডোবাচ্ছেন তা নিয়ে এখন ভারতের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে তুলকালাম চলছে।

এর মূলে আছে দুটি ঘটনা। প্রথম ঘটনাটি ইন্দোনেশিয়ার বালির এক হোটেলে ঘটে। হোটেলটি থেকে শ্যাম্পু-সাবান, তোয়ালে, হেয়ার-ড্রায়ার, এমনকি পেইন্টিং পর্যন্ত সুটকেসে ভরে নিয়ে যাওয়ার সময় এক ভারতীয় পরিবার কর্মীদের কাছে ধরা পড়ে।

তাদের জিনিসপত্র তল্লাশি এবং চরম লজ্জা ও অস্বস্তির মুহূর্ত মোবাইল ফোনে ধারণ করা হয়। এই ভিডিও ভারতে ঝড়ের বেগে ছড়িয়ে পড়ে। তল্লাশির সময় সুটকেসটি থেকে হোটেলটির জিনিসপত্র বের করার সময় পরিবারের একজনকে বারবার বলতে শোনা যায়, আমরা এগুলোর দাম মিটিয়ে দেবো।

তার জবাবে হোটেলের ম্যানেজার বলেন, বিষয়টা তাদের সম্মানের, পয়সার নয়! ভিডিওটির শেষদিকে পরিবারটির একজন জ্যেষ্ঠ সদস্যকে এক হোটেল কর্মীর কাঁধে হাত রেখে অন্যদিকে সরিয়ে নিয়ে যেতে দেখা যায়। তিনি খুব সম্ভবত তাকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।

দ্বিতীয় ঘটনাটি সুইস আল্পসের শৈল শহর জিস্টাডের আর্ক-অন-সিয়েল নামে এক হোটেলে ঘটে। এই হোটেলে ভারতীয় অতিথিরা যেন ব্রেকফাস্ট বুফে থেকে খাবার না সরান এবং করিডোর ও ব্যালকনিতে প্রচণ্ড চেঁচামেচি না করেন সেজন্য এক নোটিশ দেয়া হয়েছে।

বালির হোটেল থেকে জিনিসপত্র চুরির ঘটনাটির ভিডিও শেয়ার করে হেমন্ত নামে এক ভারতীয় টুইটার ব্যবহারকারী লেখেন, ভারতের পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে গিয়ে যারা সেখানে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছেন, তাদের পাসপোর্ট বাতিল করে দেয়া উচিত সরকারের।

এদিকে ভিডিওটি শেয়ার করে ভারতীয় লেখক আকাশ ব্যানার্জি লেখেন, আন্তর্জাতিক শক্তি হয়ে ওঠা মানে শুধু অর্থনীতির বহর বা পরমাণু বোমা নয়। আমাদের মেনে নেয়া উচিত কোথাও একটা সমস্যা নিশ্চয় আছে।

বালির ঘটনায় ভারতীয় পরিবারটির পক্ষে কাউকে কথা বলতে শোনা যাচ্ছে না। তবে আর্ক-অন-সিয়েলের বিরুদ্ধে অনেক ভারতীয়ই মুখ খুলেছেন। ভারতে অনেক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী সুইস আল্পসের হোটেলটিকে বর্জন করারও আহ্বান জানিয়েছেন।

ভারতীয়দের প্রতিবাদের মুখে হোটেল কর্তৃপক্ষ একটি বিবৃতি দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে। তবে আর্ক-অন-সিয়েলের নোটিশটি ভারতীয় শিল্পপতি হর্ষ গোয়েঙ্কার চোখে পড়ার পর তিনি এর ছবি টুইট করেন।

তিনি টুইটে লেখেন, পর্যটক হিসেবে আমরা সত্যিই খুব উগ্র, চিৎকারবাজ, উদ্ধত এবং অন্যের সংস্কৃতির প্রতি অসংবেদনশীল। আমাদের এই ছবি সত্যিই পাল্টানো দরকার। ভারত একটি আন্তর্জাতিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে এবং এই পর্যটকরাই বিশ্বে দেশের ‘সেরা রাষ্ট্রদূত’।