বিদেশ | তারিখঃ জুলাই ১৮, ২০১৯ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 642 বার
রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে দায়ী হওয়ার কারণে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইংয়ের ওপর মঙ্গলবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এসময় আরও কয়েকজন সিনিয়র সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ট্রাম্প প্রশাসন। মার্কিন এই নিষেধাজ্ঞার ফলে মিয়ানমারের ওই শীর্ষ সেনা কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবে না। খবর রয়টার্সের।
যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় মিয়ানমারের সেনাপ্রধানের ডেপুটি সোয়ে উইন এবং আরও দুইজন সিনিয়র কমান্ডার এবং তাদের পরিবারও রয়েছে। ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে মিয়ানমারে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর সেনা অভিযান শুরু হওয়ার পর এটাই যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে কঠোর আরোপ। এছাড়াও অন্য দুই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থান ও এবং অং অং-র ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এক বিবৃতিতে বলেছেন, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিপীড়নের ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে বার্মিজ (মিয়ানমার) সরকার কোনও পদক্ষেপ না নেয়ায় আমরা উদ্বিগ্ন; একইসঙ্গে বার্মিজ সেনাবাহিনী দেশজুড়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিপীড়ন অব্যাহত রেখেছে বলেও আমরা জানতে পারছি।
পম্পেও বলেন, সম্প্রতি প্রকাশ পাওয়া তথ্যে জানা গেছে- ২০১৭ সালে ইন দিন গ্রামে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযানের সময় বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত সেনাসদস্যদের ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন মিন অং হ্লেইং। তিনি বলেন, সেনাবাহিনী ও এর শীর্ষ নেতৃত্বকে জবাবদিহিতার আওতায় না আনার ক্ষেত্রে এটা একটা বাজে উদাহরণ।’
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ইন দিন গ্রামে হত্যাকাণ্ডের কথা বিশ্বকে জানিয়ে সাংবাদিকদের ৫০০ দিনের বেশি জেল খাটতে হয়েছে; অথচ মাত্র কয়েক মাস কারাগারে থাকার পর অপরাধীদের ছেড়ে দেন কমান্ডার-ইন-চিফ।
ইন দিন গ্রামে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা প্রকাশ করেন রয়টার্সের দুই সাংবাদিক ওয়া লোন ও কিয়াও সোয়ে ও। এ ঘটনায় রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ভঙ্গের অভিযোগে তাদের ১৬ মাসের বেশি কারাগারে কাটাতে হয়। পরে গত ৬ মে এই দুই সাংবাদিক সাধারণ ক্ষমা পেয়ে মুক্তি পান।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক আন্তর্জাতিক মন্ত্রী পর্যায়ের একটি সম্মেলনের প্রথম দিন যুক্তরাষ্ট্র এই ঘোষণা দিলো। এই সম্মেলনে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরাও যোগ দিয়েছেন।
ধর্মীয় স্বাধীনতার পক্ষে অন্যতম একজন আন্দোলনকর্মী পম্পেও বলেন, এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রই প্রথম সরকার যারা প্রকাশ্যে বার্মিজ সেনাবাহিনীর শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলো।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইনে অভিযান শুরু করলে সাত লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। জাতিসংঘের তদন্তকারীরা বলছেন, সেখানে ব্যাপক হত্যাকাণ্ড, গণধর্ষণ এবং অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটেছে- যা ‘গণহত্যামূলক মনোভাব’ নিয়ে করা হয়েছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এসব মানবাধিকার লঙ্ঘনকে গণহত্যা বলেনি। তবে দেশটি মিয়ানমার সেনাবাহিনী অভিযান জাতিগত শুদ্ধি অভিযান হিসেবে বর্ণনা করেছে।
Leave a Reply