অপরাধ সংবাদ | তারিখঃ জুলাই ৯, ২০১৯ | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 375 বার
কিছু কিছু ওসি-ডিসি নিজেদের জমিদার মনে করেন , মনে হয় তারাই অল ইন অল-এমন মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। আজ মঙ্গলবার, ফেনীর সোনাগাজী মডেল থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের জামিন শুনানিকালে বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেমের জামিন শুনানিতে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আর মোয়াজ্জেমের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. আহসান উল্লাহ ও সালমা সুলতানা।
এছাড়াও আদালতে উপস্থিত ছিলেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার বাদী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। তার সঙ্গে আইনজীবী মো. আব্বাস উদ্দিন।
শুনানিতে মোয়াজ্জেমের আইনজীবী মো. আহসান উল্লাহ আদালতকে বলেন, ‘তার (মোয়াজ্জেম) মোবাইল ফোন থেকে ভিডিওটি এক সাংবাদিকের হাতে চলে গেছে। সেখান থেকেই ভিডিওটি ছড়িয়েছে।‘
তখন আদালতে তার কথার উত্তরে বলেন, ‘সাংবাদিকের হাতে ভিডিওটি আগে পৌঁছালে তাকে (নুসরাত) মরতে হত না।‘
মোয়াজ্জেমের আইনজীবী বলেন, ‘দেশের সাংবাদিকের সংখ্যা বেশি হয়ে গেছে। ওই সাংবাদিক ওসির মোবাইল থেকে ভিডিওটি নিয়ে তা ছড়িয়ে দিয়েছে এবং সে তা স্বীকার করেছে। যে ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তার সাজার মাত্রা কম, তার অপরাধটি জামিনযোগ্য এবং তিনি অসুস্থ হওয়ার কারণে তার চিকিৎসা দরকার বলেই জামিন আবেদন করেছি। এছাড়া তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা তার পেনশনের বিষয় রয়েছে। জামিন দিলে তিনি তো আর পালিয়ে যাবেন না।‘
এ সময় আদালত বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি গুরুতর। সে অপরাধে সাজা বেশি না কম তা বড় কথা নয়।‘
এরপর মোয়াজ্জেমের আইনজীবী মামলার বাদী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের ব্যক্তিগত বিষয়ে মন্তব্য করলে আদালত বলেন, সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ। ব্যারিস্টার সুমনও সমাজের দর্পণ’
তখন মোয়াজ্জেমের আইনজীবী বলেন, ‘সরকারি চাকরি যারা করেন তারাই জানেন তাদের কি কষ্ট।‘
শুনানির সময় অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘সরকারি অফিসার হয়ে তিনি (মোয়াজ্জেম) ভিডিও করলেন, তা ভাইরাল হল। তাকে জামিন দিলে জনমনে কি বার্তা যাবে। তিনি অসুস্থ থাকলে জেল অথরিটি রয়েছে, তারাই তাকে চিকিৎসা করাবেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রিজনারস সেলে চিকিৎসা দেয়ার সুযোগ আছে।‘
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ কর্মকর্তাদের এমন দায়িত্বহীন কাজ আগে দেখিনি। মেয়েটিকে যেসব প্রশ্ন করেছে তা অশ্লীল ভাষা।‘
তখন আদালত বলেন, ‘কিছু কিছু অফিসার নিজেদের সর্বেসর্বা মনে করে। কিছু কিছু কর্মকর্তা এমন আছে, তবে সবাই কিন্তু না। অনেক দেশেই আছে, তবে আমাদের দেশে বেশি।
এর আগে, ১৭ই জুন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। ৩০শে জুন ওসি মোয়াজ্জেমের পক্ষে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবী। পহেলা জুলাই এই বিষয়ে শুনানির জন্য আজকের দিন ঠিক করে হাইকোর্টে।
গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করার ২০ দিনের মাথায় গত ১৬ই জুন মোয়াজ্জেম হোসেনকে হাইকোর্ট এলাকা থেকে গ্রেফতার করে শাহবাগ থানা পুলিশ।
Leave a Reply