ভারতের শতাব্দী প্রাচীন রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করলেন রাহুল গান্ধী। লোকসভা নির্বাচনে দলের বড় পরাজয়ের পর থেকে তার পদত্যাগের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিলো। অবশেষে বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিলেন সরে দাড়ানোর। আসছে এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন সভাপতির নাম ঘোষণা করা হবে। এনডিটিভি।

রাহুল গান্ধী বলেন, “আর দেরি না করে যত দ্রুত সম্ভব দলের নয়া সভাপতি নির্বাচন করা হোক,আমি এই প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকছি না।আমি ইতিমধ্যেই আমার পদত্যাগপত্র দিয়ে দিয়েছি এবং দলের সর্বভারতীয় সভাপতি পদের দায়িত্বে থাকছি না”।

যতই কংগ্রেসের নেতারা তাঁকে বারবার নিজের পদত্যাগপত্র ফিরিয়ে নিতে অনুরোধ করুন না কেন তাতে তিনি সাড়া দিতে অপরাগ, নিজের সিদ্ধান্ত বদলানো সম্ভব নয় বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি।রাহুল গান্ধি কংগ্রেসের কার্যকরী কমিটিকে বলেন, খুব তাড়াতাড়ি একটি বৈঠক ডাকা হোক, যাতে দলের নতুন সভাপতি কে হবেন সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নতুন নাম নির্বাচন করে তা জানিয়ে দেওয়ার জন্যেও দলকে পরামর্শ দেন রাহুল।

গত লোকসভা নির্বাচনে গোটা দেশেই অত্যন্ত খারাপ ফল করে কংগ্রেস। রাহুল গান্ধি নিজে কংগ্রেসের ঘাঁটি বলে পরিচিত আমেঠিতে প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী স্মৃতি ইরানির কাছে হেরে যান। যদিও কেরালার ওয়ানাড কেন্দ্র থেকে জিতে কিছুটা হলেও মুখ রক্ষা করেন সোনিয়া পুত্র। এরপরেই রাহুল অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন কংগ্রেসের এই হারের দায় কোনো নেতাই নিতে আগ্রহী নন। তাই তিনিই কংগ্রেসের খারাপ ফলের দায় নিয়ে গত ২৫ মে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দেন।

তার আগে ২০ জুন এনডিটিভিকেও এক সাক্ষাৎকারে রাহুল জানান” যে কোনো বিষয়েই একটি দায়বদ্ধতা থাকে”।তবে রাহুল গান্ধির পদত্যাগের সিদ্ধান্তের পরেই দেশ জুড়ে বিভিন্ন কংগ্রেস নেতাদের মধ্যে পদত্যাগ করার হিড়িক পড়ে যায়।

পদত্যাগপত্রে ভারতের সর্বশেষ সাধারণ নির্বাচনে পরাজয়ের দায়িত্বভার নেয়ার কথা উল্লেখ করেছেন।

পদত্যাগপত্রে তিনি উল্লেখ করেছেন, যদিও ভারতের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি নিয়ে তার কোন ”ঘৃণা বা ক্ষোভ” নেই, কিন্তু ভারত নিয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়টিকে তার শরীরের প্রতিটি কোষ বিরোধিতা করে, যা বিভেদ ও ঘৃণার ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

তিনি নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। যে, ”শুধু একটি রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধেই আমাদের লড়তে হয়নি …ভারত রাষ্ট্রের পুরো ব্যবস্থার সঙ্গ আমাদের লড়তে হয়েছে।’