ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেফতার ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে সোনাগাজী থানা পুলিশের প্রতিনিধিদের কাছে হস্তান্তর করেছে শাহবাগ থানা পুলিশ। সোমবার দুপুরের আগেই তাকে বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হবে।

গতকাল রাজধানীর হাইকোর্ট এলাকা থেকে ওসি মোয়াজ্জেমকে গ্রেফতার করে শাহবাগ থানা পুলিশ। আদালত থেকে ওই গ্রেফতারি পরোয়ানা যেহেতু সোনাগাজী থানায় পাঠানো হয়েছিল, সেহেতু সোমবার সকালে তাদের হাতেই মোয়াজ্জেমকে তুলে দেওয়া হয়। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে শাহবাগ থানার পরিদর্শক অপারেশনস মাহবুবুর রহমান জানান, সোনাগাজী থানা পুলিশের একটি দল গতরাতেই ঢাকা এসেছে। আজ সকালে আমরা তাদের কাছে হস্তান্তর করে দিয়েছি। তারাই মোয়াজ্জেম হোসেনকে আদালতে হাজির করবে।

একই তথ্য জানিয়েছেন সোনাগাজী সার্কেলের এএসপি সাইকুল আহমেদ ভুঁইয়া। তিনি জানান, সোনাগাজীর অফিসার শাহবাগ থানায় আছেন। তারাই মোয়াজ্জেম হোসেনকে সাইবার ট্রাইব্যুনালে নিয়ে যাবেন।

গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আগে রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত ছিলেন ওসি মোয়াজ্জেম। কিন্তু পরোয়ানা জারির ২০ দিনেও তাকে গ্রেফতার করতে না পারায় প্রশ্ন উঠেছিল পুলিশের সক্ষমতা নিয়ে। পুলিশপ্রধানের পাশাপাশি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও এ বিষয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে। ওসি মোয়াজ্জেমকে পালিয়ে যেতে খোদ পুলিশই সহায়তা করেছে, এমন অভিযোগ শুনতে হয়েছে। যদিও পুলিশ সদর দপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বারবারই বলা হয়েছিল, ওসি মোয়াজ্জেম দেশেই আছেন এবং তাকে শিগগিরই গ্রেফতার করা হবে।

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি তার মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনার পর মোবাইল ফোনে তার বক্তব্য ধারণ করেন ওসি মোয়াজ্জেম। এরপর নুসরাতকে গায়ে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটলেও ধারণ করা ওই ভিডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেন তিনি।

ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গত ১৫ এপ্রিল ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সুমন। বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ ও মামলার নথি পর্যালোচনা করে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন ২৭ মে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। এর পর থেকেই পলাতক ছিলেন ওসি মোয়াজ্জেম।