সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে অস্ট্রেলিয়ায় মোমেনা সোমা নামের বাংলাদেশি এক তরুণীকে ৪২ বছরে কারাদণ্ড দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার আদালত৷

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়: ইসলামিক স্টেটের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে মেলবোর্নে আশ্রয়দাতাকে হত্যার চেষ্টা চালানোয় তাকে এ দণ্ড দেয়া হয়৷

অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া স্টেট সুপ্রিম কোর্ট বুধবার সোমার এই দণ্ডাদেশ ঘোষণা করে৷

রায়ে বিচারক লেসলি টেইলর জানান, ৪২ বছর সাজার মধ্যে ৩১ বছর ৬ মাসের মধ্যে কোনো ধরনের প্যারোল সুবিধা পাবেন না ২৬ বছর বয়সী সোমা৷ তার মানে, টানা ৩১ বছর ৬ মাস জেলেই থাকতে হবে তাকে৷

আদালতে সরকারি কৌঁসুলিরা জানান, ২০১৩ সালে ঢাকায় থাকার সময় প্রথম ‘জঙ্গিবাদে’ আকৃষ্ট হন সোমা৷ এরপর ইসলামিক স্টেটের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে অমুসলিমদের হত্যার বিষয়টি আসে তার মাথায়৷

অস্ট্রেলিয়ায় আসার আগে আইএসের হয়ে যুদ্ধে যোগ দিতে সিরিয়ায় যেতে চেয়েছিলেন সোমা৷ সে লক্ষ্যে পড়াশোনার নামে তুরস্কে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হন তিনি৷ এরপর লা ট্রোব বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার বৃত্তি নিয়ে স্টুডেন্ট ভিসায় ২০১৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মেলবোর্ন শহরে যান তিনি৷

মামলার শুনানিতে উঠে আসে, মেলবোর্নে এসে সোমা প্রথমে ‘হোমস্টে সার্ভিসের’ মাধ্যমে একটি অস্ট্রেলীয় পরিবারের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন এবং তাদের ওপর হামলার পরিকল্পনা করেন৷ ৩ ফেব্রুয়ারি হামলার জন্য নাইট গগলস কিনে আনেন তিনি এবং এর তিন দিন পর বাড়ির ম্যাট্রেসে ছুরি দিয়ে আঘাত করে হামলার মহড়া দেন তিনি৷

তখন ম্যাট্রেসে কাটাছেঁড়ার এমন কাণ্ডের কথা ওই পরিবারের সদস্যরা হোম সার্ভিসকে জানালে তারা সোমাকে সিনগারালেভুর বাসায় স্থানান্তর করে৷ নতুন বাসায় ওঠার তিন দিনের মাথায় তিনি সিনগারালেভুর উপর ছুরি নিয়ে হামলায় চালিয়েছিলেন৷ হামলার সময় সোমা ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি দিয়েছিলেন বলে শুনানিতে জানা যায়৷

‘‘আপনার কর্মকাণ্ড ও বিভিন্ন কথাবার্তা চরম হতাশাজনক,” সাজার রায় শুনিয়ে সোমাকে বলেছেন বিচারক লেসলি টেইলর৷

সোমার কীর্তি, পুরো অস্ট্রেলীয় সমাজে ভীতির তরঙ্গ ছড়িয়ে দিয়েছে’ বলেও মন্তব্য করেন বিচারক৷
সূত্র : ডয়চে ভেলে