১৯৮৬ সালে নোয়াখালীবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে ঢাকা-নোয়াখালী রেলপথে আন্ত:নগর উপকুল এক্সপ্রেস ট্রেন চালু হয়।চালু হওয়ার পর থেকে কয়েক বছর যাত্রী সেবা ভাল থাকলেও ‘৯০ এর পর থেকে শুরু হয় ভোগান্তি । নামে আন্ত:নগর এক্সপ্রেস হলেও নোয়াখালী থেকে ঢাকা পর্য্যন্ত ১০/১১ টি রেল স্টেশনে যাত্রাবিরতি এবং পথিমধ্যে ট্রেনের গতি কমিয়ে যাত্রী উঠানামা নিত্যকার বিষয়। এসব কারণে উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেন কখনোই নিদ্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পারছেনা। এছাড়া ট্রেনের প্রতিটি বগিতে ময়লা আবর্জনা, তেলাপোকা, ছারপোকা এবং ইঁদুর ্ন তো আছেই।সেই সাথে পাল্লা দিয়ে আছে ভিক্ষুক আর হকারের উৎপাত । একটি এসি বগি সহ উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে ১৪ থেকে ১৫ টি বগি থাকে। এর মধ্যে ১ টি প্রথম শ্রেনী,২ টি চেয়ার কোচ,এবং ১১ থেকে ১২ টি শোভন শ্রেনীর বগি থাকে উপকুল এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে ।এসি বগিতে মাঝ পথে এসি বন্ধ হয়ে যাওয়া নিত্য দিনের কাজ। অচল টয়লেট,ভাঙ্গাচুরা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি নিয়ে ধুঁকে ধুঁকে চলছে আন্তঃনগর উপকূল এক্সপ্রেস।আসন স্বল্পতার কারনে প্রতিদিন শতশত যাত্রী দাঁড়িয়ে পার হচ্ছে নোয়াখালী-ঢাকার দীর্ঘ পথ। সড়ক পথের পরিবর্তে রেলপথকে যাত্রীরা নিরাপদ মনে করে বিধায় প্রতিদিন যাত্রীচাহিদা বাড়ছে কিন্তু সেই অনুযায়ী বাড়ছেনা যাত্রী সেবা। সকাল ৬টায় নোয়াখালী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেন সকাল ১১-৫০ মিনিটে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌছার সিডিউল টাইম থাকলেও কখনই ট্রেনটি নির্দিষ্ট সময় পৌঁছাতে পারে না। । আবার ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে বিকাল ৩-২০ মি. নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে ট্রেনটি ২১-৫০ মি্নিট নোয়াখালীতে পৌঁছানোর সিডিউল থাকলেও কখনই নিদ্দিষ্ট সময়ে পৌঁছাতে পারে না । রেলওয়ের ঢাকা-চট্রগ্রাম,ঢাকা- সিলেট,ঢাকা-রাজশাহী রুটে প্রায়ই নতুন নতুন আন্তঃনগর ট্রেন সংযোজন হলেও লক্কর ঝক্কড় বগি ,ইঞ্জিন দিয়ে চলেছে ঢাকা-নোয়াখালী রুটের একমাত্র আন্তঃনগর ট্রেন। এই কারনে ট্রেনটি চাহিদা মত যাত্রী সেবা দিতে পারছেনা। উপরন্ত নোয়াখালী-ঢাকারুটে সড়ক পথে নিত্যযানজট,সড়ক দূর্ঘটনার কারনে রেলপথে নিরাপদ ভ্রমনের আশায় রেল ভ্রমনের দিকে ঝুঁকছে যাত্রীরা। তাই ঢাকা-নোয়াখালী রুটে আরেকটি আন্তঃনগর ট্রেন চালু এবং আন্তঃনগর উপকূল এক্সপ্রেসে নতুন বগি,নতুন ইঞ্জিন সংযোজন, টাইম সিডিউল ঠিক রেখে যাত্রীসেবার মানোন্নয়ন এখন গনমানুষের দাবীতে পরিনত হয়েছে। ঢাকা -নোয়াখালী রুটের যাত্রীদের দাবী এবং চাহিদার প্রতি রেলপথ বিভাগের বিমাতা সুলভ আচরন কবে বন্ধ হবে তা এই রুটে যাতায়াত করা প্রতিটি যাত্রীর জিজ্ঞাসা। যাত্রীদের বিশ্বাস বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রভাবশালী মন্ত্রী, মাননীয় সড়ক ও সেতু পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেব, জাতীয় সংসদের স্পীকার শিরিন শারমিন, মাননীয়া প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী জনাব জাহাঙ্গীর আলম এই বিষয়ে দৃষ্টি দিলে যাত্রীদের দূর্দশা লাগব হত। প্রান ফিরে পেত ধুঁকে ধুঁকে চলা নোয়াখালী-ঢাকা রুটে চলাচল করা একমাত্র আন্তঃনগর ট্রেন ‘উপকুল এক্সপ্রেস’।