বহুল আলোচিত ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকাণ্ডের অন্যতম পরিকল্পনাকারী ইফতেখার উদ্দিন রানাকে (২১) গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। শনিবার ভোর রাতে রাঙামাটি সদরের টিঅ্যান্ডটি আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন পিবিআইয়ের চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মঈনউদ্দিন।

তিনি জানান, ‘নুসরাত হত্যা মামলায় ইফতেখার উদ্দিন রানার নাম নেই। তদন্তে তার সংশ্লিষ্টতার তথ্য বেরিয়ে আসে। কারাগারে অধ্যক্ষ সিরাজের সঙ্গে দেখা করার পর তার অনুসারীরা মাদ্রাসার হোস্টেলে যে বৈঠকে নুসরাতকে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যার পরিকল্পনা হয়, সেই বৈঠকে ছিলেন ইফতেখার রানা’।

তিনি আরও জানান, ‘রানা সোনাগাজীর চরগনেশ এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে। হত্যাকাণ্ডের পর সে রাঙামাটি চলে যায়। গ্রেফতারের পর তাকে ফেনীতে পাঠানো হয়েছে। রবিবার তাকে আদালতে হাজির করা হবে’।

ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত নুসরাত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ইফতেখার উদ্দিন রানাসহ ২০ জনকে আটক করা হলো। এদের মধ্যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে চারজন। ১৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড দেওয়া হয়েছে। এ মামলায় সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি রুহুল আমিনকেও আটকের পর শনিবার আদালতে হাজির করেছে পিবিআই।

উল্লেখ্য, নুসরাত সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলো। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে নুসরাতের মা বাদী হয়ে গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিলো। গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম আরবি প্রথম পত্রের পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এসময় কৌশলে তাকে ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সেখানে তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে নুসরাত মারা যায়।