চ্যাম্পিয়নস লিগে গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে সিএসকেএ মস্কোর কাছে ৩-০ গোলের ব্যবধানে হেরেছে রিয়াল মাদ্রিদ। সিএসকেএ এর গোলগুলো করেন শেলভ, শেচেনিকভ ও শিগার্ডসন।
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খেলায় ফিরতেই পারল না রিয়াল! গোল মিসের পসরা সাজিয়ে বসে শেষ পর্যন্ত খেসারত দিল স্প্যানিশ জায়ান্টরা। আগেই নকআউট নিশ্চিত হয়েছে রিয়ালের। তাই বলে সিএসকেএ মস্কোর মতো দলের কাছে ৩-০ গোলের হার!

উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে এর আগে ৩৩ ম্যাচের একটিতে প্রতিপক্ষের জালে বল জড়াতে পারেনি সোলারির শিষ্যরা। ওই ম্যাচটি এই মস্কোর বিপক্ষেই। চলতি মৌসুমেই ম্যাচটি রিয়াল হেরেছিল ১-০ গোলের ব্যবধানে। শেষবার ২০০৮-০৯ মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপপর্বে জুভেন্টাসের কাছে দুই লেগে হেরেছিল রিয়াল। দশ বছর পর এবার জুভেন্টাসের হয়ে কাজটি করল সিএসকেএ। রাশিয়ার লুঝনিকি স্টেডিয়ামে প্রথম লেগে হারের পর নিজেদের মাঠে আরও বেহাল দশা রিয়ালের। রীতিমতো টালমাটাল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নেরা। গ্রুপ চ্যাম্পিয়নের তকমা নিয়ে শেষ ষোলোতে উঠলেও লা লিগায় আগের ম্যাচে হুয়েস্কার বিপক্ষে ‘ঘাম ঝরানো’ জয়ের পরে, মস্কোর মতো দলের কাছে দুই লেগেই এভাবে ধরাশায়ী! ঝড়ের পূর্বাভাস নয় তো?

সোলারি রক্ষণ সাজান অনিয়মিত তরুণ খেলোয়াড়দের দিয়ে। মাঝমাঠেও মডরিচ-বেলদের বেঞ্চে বসিয়ে রাখেন রিয়ালের আর্জেন্টাইন এই কোচ। স্বাগতিকদের রক্ষণের তরুণ তুর্কিদের প্রথম মিনিটেই ভড়কে দেয় সিএসকেএ। ফার্নান্দেজের শট গোলপোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যাওয়ায় বেঁচে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। এরপর অবশ্য সুযোগ বেশি পায় রিয়ালই। প্রথমার্ধেই এক এক করে বেশ কটি সুযোগ হাতছাড়া করেন ইসকো-অ্যাসেনসিওরা।


খেলার ২৪তম মিনিটে গোলের প্রথম সুযোগ পায় রিয়াল। দুইবারের চেষ্টাতেও সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি অ্যাসেনসিও-ভিনিসিউস জুনিয়র। ভিনিসিউস জুনিয়রের শট আটকে দেন মস্কোর গোলরক্ষক। ফিরতি বলে শট করেন মার্কো অ্যাসেনসিও। তাও গোলবারে লেগে ফিরে আসে। মিনিট দু-এক পর ফের গোলের সুযোগ নষ্ট করেন অ্যাসেনসিও। এবার তাঁর সঙ্গী বেনজেমা।

রিয়াল খেলোয়াড়দের গোল মিসের ‘উৎসবে’ অতিথিরা অপেক্ষায় শুধু একটা ভালো মুহূর্তের। যখন গ্যালারি ঠাসা রিয়াল সমর্থকদের চিৎকার কিছুটা হলেও থামানো যাবে। সে মুহূর্ত আসতে বেশি সময় লাগেনি অবশ্য। ম্যাচের ৩৭তম মিনিটেই বার্নাব্যু ঠান্ডা করে দেন শেলভ। শিগার্ডসন অসাধারণ নৈপুণ্যে মাঝমাঠ থেকে বল টেনে এনে ডি বক্সে আড়াআড়ি পাস দেন শেলভকে। মুহূর্তেই জায়গা করে নিয়ে বল জালে জড়ান শেলভ।

প্রথমার্ধের শেষ বাঁশি বাজার আগে আরও একবার বার্নাব্যুতে নেমে আসে পিনপতন নীরবতা। এবার রিয়াল সমর্থকদের বুকে ছুরি চালান শেচেনিকভ। প্রথম চেষ্টায় চালোভের শট আটকালেও ফিরতি বলে শেচেনিকভের নেওয়া শটে কিছু করার ছিল না রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়ার।
দ্বিতীয়ার্ধে নিয়মিত একাদশের খেলোয়াড়দের নামিয়েও ব্যবধান কমাতে পারেনি সোলারির শিষ্যরা। ৭৩ মিনিটে উল্টো গোল হজম করে বসে। শিগার্ডসনের আড়াআড়ি শটে রিয়ালের পরাজয় নিশ্চিত হয়। ততক্ষণে খালি হতে শুরু করে গ্যালারিও।
এ জয়ে অবশ্য সিএসকেএ মস্কোর কোনো লাভ হয়নি। গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিতে হচ্ছে রাশিয়ার ক্লাবটিকে। ‘জি’ গ্রুপ থেকে রিয়ালের আরেক সঙ্গী ইতালিয়ান জায়ান্ট রোমা।