সাভারের আশুলিয়ায় স্বামীকে আটকে স্ত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরীক্ষার জন্য ধর্ষণের শিকার ওই নারীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।

সোমবার রাতে আশুলিয়ার নরসিংহপুর সোনা মিয়া মার্কেট এলাকা থেকে ছয় ধর্ষককে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর আগে রোববার গভীর রাতে একই এলাকার নাছির নামে এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে ভুক্তভোগী ওই নারী ও তার স্বামীকে কক্ষে আটকে রাখা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, নরসিংহপুর এলাকার মো. জিন্নাহর ছেলে জাহিদুল ইসলাম (২২), একই এলাকার শফিকুল ইসলামের ছেলে আজাদ হোসেন (২৪), জলিল সরকারের ছেলে রানা সরকার (২৮), কোনাপাড়া এলাকার আবদুল সোবহান শেখের ছেলে রবিউল শেখ (২০), একই এলাকার মো. রিয়াজুলের ছেলে রুবেল (২২) ও ঘোষবাগ এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সাগর হোসেন (২৪)। তবে রজন নামে জড়িত একজন পলাতক রয়েছে।

আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফজিকুল ইসলাম জানান, রোববার সন্ধ্যায় নরসিংহপুর সোনা মিয়া মার্কেট এলাকায় বন্ধুর বাড়িতে পোশাককর্মী স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতে যান তার স্বামী। এ সময় স্থানীয় এক ইউপি সদস্য তাহের মৃধার ম্যানেজার রজন, তার সঙ্গী রবিউলসহ সাতজন ওই দম্পতিকে আটকে তারা স্বামী-স্ত্রী কি না সে ব্যাপারে জানতে চায়।

পরে সোনা মিয়া মার্কেট এলাকার নাছিরের বাড়িতে স্বামী ও স্ত্রীকে পৃথক কক্ষে আটকে রাখে। এ সময় রজনসহ তার সঙ্গীরা গভীর রাত পর্যন্ত পোশাককর্মী ওই নারীকে একটি কক্ষে আটকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে ভুক্তভোগী পরিবারের কাছে মুঠোফোনে ওই দম্পতির মুক্তিপণ হিসেবে ২০ হাজার টাকা দাবি করে ধর্ষণকারীরা।

এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে রোববার দিবাত রাত ১টার দিকে আশুলিয়া থানায় অভিযোগ করা হলে মুক্তিপণের টাকা প্রদানের শর্তে ফাঁদ পাতে পুলিশ। পরে রোববার গভীর রাতে সোনা মিয়া মার্কেট এলাকায় রবিউল ও রুবেল মুক্তিপণের টাকা নিতে এলে তাদের হাতেনাতে আটক করা হয়।

পরবর্তীতে আটকদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার রাতে সোনা মিয়া মার্কেটসংলগ্ন ইয়াপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তাহের মৃধার অফিস থেকে এ ঘটনায় জড়িত আরো ছয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা ইউপি সদস্য তাহের মৃধার অনুসারী বলে জানিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি ধর্ষণ মামলা (নং-৫) দায়ের করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক এলাকাবাসী জানান, ইউপি সদস্য তাহের মৃধা এলাকায় ধর্ষণ, চুরি, স্বেচ্ছাচারিতা, অবৈধ গ্যাস সংযোগ প্রদানসহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত। তার রয়েছে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী। তাদের ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।

তবে অভিযোগের সত্যতার ব্যাপারে ইউপি সদস্য তাহের মৃধার সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।