মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হবিগঞ্জের লাখাই থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত আলীসহ দুই আসামির বিরুদ্ধে আনা গণহত্যা, লুঠপাটসহ সাত অভিযোগের প্রত্যেকটিতেই মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

লিয়াকত আলী ছাড়াও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি হলেন, আমিনুল ইসলাম ওরফে রজব আলী। দুই আসামিই পলাতক।

সোমবার (৫ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল ৩১২ পৃষ্ঠার এ রায় ঘোষণা করেন।

এসময় ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশন পক্ষে উপস্থিত ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু, জেয়াদ আল মালুম, রানা দাস গুপ্ত, মোখলেছুর রহমান বাদল, সাবিনা ইয়াসমিন মুন্নি, রেজিয়া সুলতানা চমন প্রমুখ। আর আসামিপক্ষে ছিলেন গাজী এমএইচ তামিম।

অভিযোগ সাতটি হলো:

প্রথম অভিযোগ: আসামিরা ১৯৭১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানি সেনা সদস্য ও রাজাকার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে লাখাই থানার কৃষ্ণপুর গ্রামে গণহত্যা, লুটপাট। ওইদিন কৃষ্ণপুর গ্রামে নৃপেণ রায়ের বাড়িতে রাধিকা মোহন রায় ও সুনীল শর্মাসহ ৪৩ জন হিন্দুকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

দ্বিতীয় অভিযোগ: আসামিরা একাত্তরে হবিগঞ্জের লাখাই থানার চণ্ডিপুর গ্রামে গণহত্যা ও লুটপাট করে।

তৃতীয় অভিযোগ: লাখাই থানার গদাইনগর গ্রামে গণহত্যা ও লুটপাট।

চতুর্থ অভিযোগ: অষ্টগ্রাম থানার সদানগর গ্রামে শ্মশানঘাটে হত্যা।

পঞ্চম অভিযোগ: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর থানার ফান্দাউক গ্রামের বাচ্চু মিয়াকে অপহরণ এবং রঙ্গু মিয়াকে অপহরণ ও হত্যা।

ষষ্ঠ অভিযোগ: অষ্টগ্রাম থানার সাবিয়ানগর গ্রামে চৌধুরী বাড়িতে হামলা চালিয়ে হত্যা।

সপ্তম অভিযোগ: সাবিয়ানগর গ্রামে খাঁ বাড়িতে হত্যাকাণ্ড।
মামলার তদন্ত রিপোর্ট থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, ২০০৩ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত লিয়াকত আলী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। সভাপতি থাকা অবস্থাতেই যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০১০ সালে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। ২০১৬ সালের ১৮ মে এই দু’জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। সেই থেকে আসামিরা পলাতক রয়েছেন।

গত ১৬ আগস্ট এ মামলার শুনানি সমাপ্তি করে যেকোনও দিন রায় ঘোষণা করা হবে মর্মে মামলাটি সিএভি (অপেক্ষমাণ) রাখেন ট্রাইব্যুনাল। গত ৪ নভেম্বর এ মামলার রায়ের জন্য সোমবার দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।