বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের সাবেক অলরাউন্ডার চামেলী খাতুনের চিকিৎসার সব দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উন্নত চিকিৎসার জন্য চামেলীকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সকালে জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে তাকে আকাশপথে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।

চামেলীর সঙ্গে তার বোন, দুলাভাই, ভাবি ও জেলা প্রশাসনের একজন ম্যাজিস্ট্রেট ঢাকায় গিয়েছেন।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক এসএম আবদুল কাদের জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চামেলীর চিকিৎসার সব দায়িত্ব নিয়েছেন। তার নির্দেশনা অনুযায়ী চামেলীকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ঢাকায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) লোকজন তাকে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে যাবে। সেখানে তার শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা হবে। দেশে তার চিকিৎসা সম্ভব না হলে বিদেশে পাঠানো হবে।

চামেলীর বাড়ি রাজশাহী নগরীর দরগাপাড়া এলাকায়। ২০১১ সালে পায়ের লিগামেন্ট ছিঁড়ে গেলে চামেলী জাতীয় দল থেকে ছিটকে পড়েন। এ সময় তিনি আনসার ভিডিপিতে যোগ দেন। ভেবেছিলেন লিগামেন্ট ছিঁড়ে যাওয়ার সমস্যাটি এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু দিন দিন তার অবনতি হতে থাকে। চামেলীর মেরুদণ্ডের দুই হাড়ের ফাঁকে থাকা নরম ডিস্কগুলোও নষ্ট হয়ে যেতে থাকে। এর মধ্যে দুই দফা স্ট্রোক করলে তার শরীরের ডান পাশ অবশ হয়ে যায়। আর্থিক অনটনে প্রায় বিনা চিকিৎসায় ধুঁকছিলেন এক সময়ের মাঠ কাঁপানো এই অলরাউন্ডার।

সংবাদমাধ্যমে চামেলীর করুণ দিনযাপনের সংবাদ প্রকাশ হলে তার পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন ক্রিকেটার তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মুস্তাফিজুর রহমান ও রুবেল হোসেনসহ অনেকে। চামেলীর বাড়িতে ছুটে যান রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, বিসিবি পরিচালক স্বপন চৌধুরীসহ অনেকে। মেয়র ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুই লাখ টাকা আর্থিক সহায়তাও পান চামেলী। এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন।

প্লেনে ওঠার আগে চামেলী বলেন, আমার কথা হয়তো সবাই ভুলেই গিয়েছিলেন। আমিও সেভাবে কাউকে কিছু জানাতে পারিনি। মিডিয়ার কারণে সবাই জানতে পেরেছেন। প্রধানমন্ত্রী আমার দায়িত্ব নিয়েছেন। এখনই মানসিক সুস্থতা অনুভব করছি। শারীরিক সুস্থতাও হয়তো পেয়ে যাব। সুস্থ হলে দেশের হয়ে আবার খেলব।