আন্তর্জাতিক শেয়ারবাজারগুলোতে দরপতন চলছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য বিবাদ, সৌদির সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ড ঘিরে চলমান উত্তেজনার প্রভাব শেয়ারবাজারেও পড়েছে। এটা বিশ্ব অর্থনীতি দুর্বল হওয়ার পূর্বাভাস বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।
জানা গেছে, বুধবার টোকিওর শেয়ারবাজার ৩ শতাংশ সূচক হারিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডো জোনস ইন্ডাষ্ট্রিয়াল ২ দশমিক ৪ শতাংশ সূচক হারিয়েছে। যা ২০১০ সালের মে মাসের পর সবচেয়ে খারাপ। নাসডাক এর অবস্থা গেল ২০১১ সালের পর সবচেয়ে খারাপ লক্ষ্য করা গেছে। কর্পোরেট মুনাফা কমে যাওয়া এবং বিশ্ব বাণিজ্য নিয়ে উত্তেজনায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় শেয়ারবাজার যুক্তরাষ্ট্রের নাসডাকে সূচক ৪ দশমিক ৪ শতাংশ কমে গেছে বলে উল্লেখ করেছে বিবিসি। সেপ্টেম্বরের তুলনায় নাসডাকের সূচক ১০ শতাংশ নিচে রয়েছে।
অন্যদিকে প্রযুুক্তি নির্ভর প্রতিষ্ঠানগুলোরও শেয়ার দর ব্যাপক হারে কমে গেছে। আমাজানের শেয়ার দর কমেছে  ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। ফেসবুকের কমেছে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। গুগলের মালিকানাধীন এলফাবেট এর শেয়ার দর কমেছে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ এবং নেটফ্লিক্সের কমেছে প্রায় সাড়ে ৯ শতাংশ। অথচ এই প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর ভর করেই বিগত সময়ে শেয়ারবাজার চাঙ্গা ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীরা জানিয়েছেন, গৃহায়ণ খাতের শেয়ার গত দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। অন্যদিকে ইউরোপের শেয়ারবাজারও নিম্নমুখী হয়েছে। তবে ইউরোপের পতন বেশি বড় নয়। গতকাল লন্ডনের সূচক শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ কমেছে। গড়ে ইউরোপের শেয়ারবাজারে দর কমেছে ১ শতাংশের মতো। মূলত ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে ব্রিটেনের প্রস্থানের (ব্রেক্সিট) সময় ঘনিয়ে আসার কারণে বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ বাড়ছে, যার ছাপ পড়েছে শেয়ারবাজারে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহের শুরুতে পতন হলেও শেষ দিকে কিছুটা উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ডিএসইতে মোট ৩৩৮টি কোম্পানির ১১ কোটি ৬৩ লাখ ৮০ হাজার ৯১২টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। ডিএসইতে মোট লেনদেনের পরিমাণ ৪২৫ কোটি ১০ লাখ ৬১ হাজার ২৮৬ টাকা। বুধবার লেনদেন হয়েছিল ৩৬৮ কোটি ২ লাখ টাকার। অর্থাত্ এক কার্যদিবসে লেনদেন বেড়েছে ৫৭ কোটি টাকার।
ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের কার্যদিবসের চেয়ে ৫ দশমিক ৭১ পয়েন্ট বেড়ে ৫২৮২ পয়েন্ট, ডিএস-৩০ মূল্যসূচক ৪ পয়েন্ট বেড়ে ১৮৭৬ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস শরীয়াহ সূচক ৫ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট বেড়ে ১২২৩ দশমিক ৭৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেনকৃত কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৩৭টির, কমেছে ১৫৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪২টি কোম্পানির শেয়ার। লেনদেনের শীর্ষে ছিল খুলনা পাওয়ার, অ্যাক্টিভ ফাইন, লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স, শাহাজালাল ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বেক্সিমকো লিমিটেড, সামিট পাওয়ার, ইউনাইটেড পাওয়ার, বিবিএস কেবলস ও গ্রামীণফোন।