২১ শে আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার যে ষড়যন্ত্র করেছিল, তার প্রথম শিকার হয়েছিল শৈবাল সাহা পার্থ নামের এক নিরীহ যুবক।

বুধবার সেই নৃশংস ঘটনার রায়ের পর নিলয় চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তি মর্মান্তিক সেই ঘটনা তুলে ধরে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘ওই গ্রেনেড হামলার ঘটনার তদন্ত ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডের হার্ডনেট সাইবার ক্যাফে থেকে শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়ে একটি দৈনিকে ই-মেইল পাঠানোর ঘটনার নাটক সাজানো হয়।

এই নাটক সাজিয়ে ২৫ আগস্ট বোনের বাসা থেকে ঐ সাইবার ক্যাফেতে ডেকে এনে একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা শৈবাল সাহা পার্থকে আটক করে।

৪ দিন অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখে নির্যাতনের পর ২৯ আগস্ট সিআইডি ইন্সপেক্টর তাকে আদালতে পাঠিয়ে পর্যায়ক্রমে ১৪ দিন রিমান্ডের মাধ্যমে মালিবাগ সিআইডি অফিসে নিয়ে স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য বর্বর নির্যাতন চালায়।
২৪ ঘণ্টা চোখ কালো কাপড়ে বেঁধে বৈদ্যুতিক শক দেওয়ার পাশাপাশি লাঠিপেটাসহ সব ধরণের নির্যাতন চালানো হয়। টানা ১৮ দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে থাকাকালে সারাক্ষণ চলেছে অভিনব কায়দায় নির্যাতন আর সাজানো স্বীকারোক্তি আদায়ের চাপ।

পার্থর মা ছেলের মুক্তির জন্য মন্দিরে নিজের রক্ত দিয়ে পূজা দেন। পার্থ যেহেতু ভারতে লেখাপড়া করেছেন তাই তাকে ভারতের চর হিসেবে প্রমাণেরও চেষ্টা করেছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার।

দীর্ঘ ৭ মাস কারাভোগের পর হাইকোর্টের নির্দেশে ২০০৫ সালের ২৩ মার্চ কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।

বুধবার এই মামলায় ১৯ জনের মৃত্যদণ্ড এবং ১৯ জনের যাবজ্জীবন এবং ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তিকে তিনি ন্যায়বিচার নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি নির্দোষ নিরপরাধ শৈবাল সাহা পার্থকে কলঙ্কমুক্ত বলে মন্তব্য করেছেন।

সেই শৈবাল সাহা পার্থ এখন একটি সিমেন্ট কোম্পানিতে কাজ করে। ২০০৯ সালে বিয়ে করে সংসারী হয়েছেন। আর বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত তার বাবা-মা দুজনই কুমিল্লায় তাদের গ্রামের বাড়িতে থাকেন।