রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা অনিল সেন ও তার পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। আদালতের রায়ে বৃহস্পতিবার (৯ আগস্ট) এই মুক্তিযোদ্ধাকে পরিবারসহ ভিটে থেকে উচ্ছেদ করে রাঙামাটির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পল্লব হোম দাশের নেতৃত্বে স্থানীয় প্রশাসন।উচ্ছেদের প্রতিবাদে শুক্রবার (১০ আগস্ট) সকালে ঘাগড়া এলাকায় মানববন্ধন করেছেন স্থানীয়রা। এ খবর পেয়ে দুপুরে ঘাগড়ায় ছুটে আসেন জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ। উচ্ছেদ হওয়া মুক্তিযোদ্ধার পাশে থাকার ও তার পরিবারের পুনর্বাসনের ঘোষণা দেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে ,প্রায় ৩০ বছর আগে ঘাগড়া ইউনিয়নে খাস জমিতে ঘর তুলে স্ত্রী, চার মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন মুক্তিযোদ্ধা অনিল সেন। কয়েক বছর আগে রাজ্যমনি ও বিশ্বজিৎ নামে স্থানীয় দুই ব্যক্তির সঙ্গে জমি নিয়ে অনিল সেনের বিরোধ এর জের ধরে অনিল সেনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন রাজ্যমনি ও বিশ্বজিৎ। পরে আদালতের রায়ে বৃহস্পতিবার তাকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে স্থানীয় প্রশাসন। এ সময় অনিল সেনের ইটের তৈরি ঘর ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে, অনিল সেন ও তার পরিবারকে উচ্ছেদের প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে ঘাগড়া এলাকায় রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে মানববন্ধন করে স্থানীয়রা। এতে ঘাগড়া বাজার, কলাবাগানসহ বিভিন্ন এলাকার কয়েকশ’ লোক অংশ নেয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন–স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. জাফর আলী, ছাত্রলীগ নেতা সাজীব দাশ, ক্ষতিগ্রস্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রুবেলসহ অনেকে।
ঘাগড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জগদীশ চাকমা বলেন, ‘এভাবে ভাঙচুর করবে, এটা ভাবিনি। বিষয়টি দুঃখজনক।’

রাঙামাটির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পল্লব হোম দাশ বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে পেয়ে আমরা কাগজ দেখে উচ্ছেদ করেছি।’
জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ বলেন, ‘অনিল সেন দীর্ঘদিন ধরে ওই জমিতে বসবাস করে আসছিলেন। তার বাড়ি নিয়ে কোর্টে মামলা হয়েছিল। আদালতের আদেশে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনিল সেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তার পুনর্বাসনে জেলা প্রশাসন থেকে আপতত ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। আমি অনিল সেনের সঙ্গে আছি। তার পুনর্বাসনের জন্য যা করা দরকার, সব করা হবে।’