তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় রিমান্ডে থাকা আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে শারীরিক বা মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে কিনা তা জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট। সোমবার এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত রিট আবেদনের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আর শহিদুল আলমকে নিয়ে করা রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সারাহ হোসেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার হাইকোর্টের এই বেঞ্চ শহিদুল আলমকে গোয়েন্দা পুলিশের(ডিবি) হেফাজত থেকে দ্রুত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) স্থানান্তর করে চিকিৎসা দিতে নির্দেশ দেন। তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১০টার মধ্যে সেই প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়।

এরপর শহিদুল আলমকে বুধবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে তার চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। তার শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাকে ডিবি কার্যালয়ে ফেরত পাঠানো হয়।

বৃহস্পতিবার শহিদুল আলমের স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন হাইকোর্টে উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, শহিদুল আলমের স্বাস্থ্যগত অবস্থা ভাল। কিন্তু এসময় রিটকারী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার সারাহ হোসেন আদালতে বলেন, এখানে তার স্বাস্থ্যের অবস্থা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩ এর আলোকে শহিদুল আলমের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের বিষয় উল্লেখ করা হয়নি।

এরপর হাইকোর্ট শহিদুল আলমের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন।

শহিদুল আলমের বিষয়ে গত মঙ্গলবার হাইকোর্টের দেয়া আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন সোমবার পর্যন্ত মুলতবি রেখেছেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।

গত সোমবার আইসিটি আইনে গ্রেপ্তার হওয়া আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন সিএমএম আদালত।

এরপর শহিদুল আলমের রিমান্ড চ্যালেঞ্জ করে তার স্ত্রী অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ মঙ্গলবার হাইকোর্টে একটি রিট করেন।

ওই রিটে শহিদুল আলমকে গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজত থেকে দ্রুত হাসপাতালে স্থানান্তরের নির্দেশনা চাওয়া হয়। সে রিটের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার হাইকোর্ট আদেশ দেন।

শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে ফেসবুকে ভুল তথ্য প্রচার করে জনমনে ভীতি সঞ্চার এবং রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার অভিযোগ আনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

তিনি সম্প্রতি শিক্ষার্থী আন্দোলনের বিষয়ে একাধিকবার ফেসবুক লাইভে আসেন এবং বিদেশি টেলিভিশন আল জাজিরাকেও এই বিক্ষোভ নিয়ে সাক্ষাৎকার দেন বলে অভিযোগ করেছে পুলিশ।